সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার আর নেই

সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: আমরা গভীর শোক ও দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, দেশের অন্যতম বৃহত্তম এবং ঐতিহ্যবাহী শিল্প পরিবার সিকদার গ্রুপ অব কোম্পানিজ-এর চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার গতকাল বুধবার ১০ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩০মিনিটে দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের উজ্জ্বলতম শিল্প উদ্যোক্তা জয়নুল হক সিকদার ১৯৩০ সালের ১২ আগস্ট আসামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় পরিবারের সাথে বাংলাদেশে চলে আসেন। জয়নুল হক সিকদার বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার অন্যতম অংশীদার হিসেবে বিশেষভাবে সমাদৃত। দীর্ঘ সাত দশকের বেশি সময় ধরে তিনি দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসন, পর্যটন, অর্থনীতি, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন এবং প্রায় ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।
শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি তিনি অসংখ্য উদ্যোক্তা গড়ে তুলেছেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের অনেকে তাদের ব্যবসা শুরুর প্রথম দিকে জয়নুল হক সিকদারের সহায়তা পেয়েছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি ছাড়াও একজন দানশীল মানুষ হিসেবে জয়নুল হক সিকদার বিশেষভাবে সুপরিচিত। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ছাড়াও ব্যক্তিগত আগ্রহে তিনি দারিদ্র দূরীকরণ এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া ও প্রান্তিক মানুষকে সহায়তা করেছেন।
জয়নুল হক সিকদার সেই ১৯৪৫ সাল থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ^স্ত ও ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে তাঁর পাশে থেকেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার চার দিন পর অর্থাৎ ১৯ আগস্ট তিনি রায়েরবাজারে কুলখানির আয়োজন করেন। এজন্য সে সময়ের সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা তাঁকে নানানভাবে হয়রানি করে এবং ভয়-ভীতি দেখায়, এমনকি তাঁকে জেলও খাটতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়া পর্যন্ত এই লম্বা সময় জয়নুল হক সিকদার তাঁর প্রিয় “মুজিব ভাই” এর প্রতি ভালবাসা থেকে খাটে না ঘুমিয়ে ঘরের মেঝেতেই ঘুমাতেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

সারা দেশে ‘হিট স্ট্রোকে’ ৮ জনের মৃত্যু

কারাগারেও মাদকের আখড়া