‘মুঝে জান ভিক্ষা দে মেরা ভাই’: আকবর 

‘মুঝে জান ভিক্ষা দে মেরা ভাই’: আকবর 
এদিকে, গত ৬ তারিখে ভারতের শিলচরে আকবরের অবস্থান নিশ্চিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায় দুই দেশের সীমান্তবর্তী খাসিয়াদের একটি চক্র। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোমবার সকালে তাকে ডোনা সীমান্তের গভীর জঙ্গল দিয়ে বাংলাদেশিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সোমবার ভারতীয় খাসিয়ারা আকবরকে বাংলাদেশিদের কাছে হস্তান্তর করলে সেখান থেকে দুপুর ২টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। পরে তাকে কড়া নিরাপত্তা দিয়ে সিলেটে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আনা হয়।  সোমবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমরা গতকাল (রোববার) ইনফরমেশন পেয়েছিলাম কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে সে পালিয়ে যেতে পারে। এজন্য আমরা সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছিলাম এবং কানাইঘাট সীমান্ত এলাকার কিছু বন্ধুর মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। বিশেষ করে এই টিমে নেতৃত্ব দেন কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ থানার ওসিসহ পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে ভারতের খাসিয়ারা আকবরকে আটক করেছে- এমন প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ভিডিও করা হয়নি। ওই ভিডিও কে, কোথায় করেছে- তা আমাদের জানা নেই। এরকম কিছু দেখিনি। তবে তাকে জেলা পুলিশের কানাইঘাট থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ’
তুমি কেন পালিয়ে গেলে স্থানীয়দের এমন প্রশ্নের জবাবে বরখাস্ত হওয়া এসআই আকবর ভুঁইয়া বলেন, ‘আমাকে সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছিলেন, তুমি আপাতত চলে যাও। কয়েকমাস পরে আইসো। দুই মাস পরে আসলে সব ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে আবার সব হ্যান্ডেল করা যাবে। তবে কার নির্দেশে পালিয়েছেন এ সম্পর্কে কিছু বলেননি আকবর।
ওই যুবকরা বাংলা কথা বললেও অবাঙালিদের মতো ছিল তাদের কণ্ঠস্বর। ভিডিওর যুবকদের কথাবার্তায় ভারতের খাসিয়া আদিবাসী হতে পারেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, আকবরের হাত-পা বাঁধতে থাকা লোকজন বলছিলেন, মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য সে মানুষ মেরে ফেলেছে। ওই যে ইন্টারনেটে ভিডিও ছাড়ছে। রায়হান নাম। তখন তাকে আরেকজন জিজ্ঞেস করেন, তোর নাম বল- তিনি বলেন আকবর।
এদিকে, গোয়েন্দা সূত্রগুলো আগেই জানিয়েছিল, এসআই আকবর ভারতে পালিয়ে গেছেন।  ভারতের শিলং পুলিশ বাজারে ছিল তার অবস্থান। গত ১১ অক্টোবর ভোর রাতে রায়হানকে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হয়। পরে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।

রায়হান ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন পুলিশের তরফ থেকে দাবি করা হলেও নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ ছিল পুলিশ ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরিবারের অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের তদন্ত দল ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর সত্যতা পেয়ে জড়িত থাকায় ইনচার্জ আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করেন। বরখাস্তকৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন। ঘটনার পর অন্য ছয় জন পুলিশ হেফাজতে থাকলেও আকবর পলাতক ছিলেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

বাকেরগঞ্জে ভোট জালিয়াতির পরিকল্পনাকারী আবদুল হক পুলিশ হেফাজতে

হামাসের দাবি মানবে না ইসরায়েল: নেতানিয়াহু