আ. লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১২

আ. লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১২

পাবনা (ঈশ্বরদী): পাবনার ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর এবং দলীয় কার্যালয়ের মধ্যেই একাধিক নেতাকর্মীকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ১২ জন।

সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনকে অভ্যর্থনা জানানোকে কেন্দ্র করে এসব ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, পাবনা-৪ আসনের আসন্ন উপ-নির্বাচনকে সামনে রেখে সোমবার ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেনকে অভ্যর্থনা জানাতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন দলীয় নেতারা। অভ্যর্থনার সময় সামনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু এবং সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথার মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এর রেশ ধরে তাৎক্ষণিকভাবে পৌর আওয়ামী লীগের এ দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে সভাস্থলের চেয়ার ছুড়ে একে অপরের সঙ্গে মারামারিতে লিপ্ত হন। দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও তাদের থামাতে ব্যর্থ হন। পরে এ সংঘর্ষ দফায় দফায় অন্য নেতাকর্মীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের মধ্যেই ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন যুবলীগ নেতা সানোয়ার হোসেন লাবু ও উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে রনি। তাদের দু’জনকে প্রথমে পাবনা ও পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা, আওয়ামী লীগ নেতা আবু কালাম, মুলাডুলি ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কার মালিথা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবির মালিথা, পৌর যুবলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন বিপ্লবসহ আরও ১০ জন আহত হন। তাদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বাংলানিউজকে বলেন, এটা নৌকার নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় উপ-নির্বাচনে নৌকার বিজয় লাভ করার মধ্য দিয়ে ষড়যন্ত্রের জবাব দেওয়া হবে।

ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা বলেন, নির্বাচন বানচালের জন্য পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মিন্টু ইচ্ছাকৃতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

এ ঘটনা সম্পর্কে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, দলের ভাবমূর্তি যারা নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছেন, দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে ঈশ্বরদীর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য জেলা নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনাকঙ্ক্ষিত এ ঘটনার সঙ্গে ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ নাসীর উদ্দীন বাংলানিউজকে এ ঘটনা সম্পর্কে বলেন, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। শহরে পুলিশ মোতায়েন ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে শহরের পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। কোনো পক্ষই এখনো থানায় অভিযোগ করেনি।

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

প্রধান উপদেষ্টা বরাবর সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের স্ত্রীর খোলা চিঠি

পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন নুর