মোঃ রাকিব হাসান:ডিজিটাল যুগে কলমের পরিবর্তে কীবোর্ড আর টাচস্ক্রিন যেখানে জায়গা দখল করে নিয়েছে , সেখানে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে রাজধানীর ডেমরা এলাকায় অবস্থিত একটি হাতের লেখা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “রিভিউ হ্যান্ডরাইটিং একাডেমি”। প্রতিষ্ঠানটি হাতে লেখার বিভিন্ন ফন্টের কোর্স, ক্যালিগ্রাফি সহ বিভিন্ন সেবার মাধ্যমে আবারও মানুষের কাছে ফিরিয়ে আনছে লেখার উষ্ণতা ও ব্যক্তিত্বের ছোঁয়া।
লেখার সৌন্দর্য কেবল পরীক্ষার খাতায় নয়, বরং এটি ব্যক্তিত্ব ও আত্মবিশ্বাস গঠনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ—এই বিশ্বাস থেকেই ২০১২ সালে তরুণ উদ্যোক্তা শাহাদাত হোসেন সোহান প্রতিষ্ঠা করেন রিভিউ হ্যান্ডরাইটিং একাডেমি। বর্তমানে তিনি হ্যান্ডরাইটিং অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ–এর সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে সারা বাংলাদেশে অনলাইন ও অফলাইনে রিভিউ একাডেমীর বেশ কয়েকটি শাখায় হাতের লেখা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বিভিন্ন বয়সের শতাধিক প্রশিক্ষণার্থী।
দেশে হাতে-কলমে লেখার প্রশিক্ষণ চালুর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও জায়গা করে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে অনলাইনে এখন তাদের ক্লাস চলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আমেরিকা, লন্ডন, কানাডা, দুবাই, কুয়েত, সৌদি আরব, আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান সহ প্রায় ২৫টি দেশের শিক্ষার্থীরা তাঁর কাছে বিভিন্ন ফন্টের লেখার কোর্স করছে।
প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা জাতীয় পর্যায়েও উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। হ্যান্ডরাইটিং অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা ২০২৩-২৪ এবং ২০২৫ সালে প্রথম স্থান অর্জন করে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার শাহাদাত হোসেন সোহান দৈনিক সমাচার-কে জানান, “আমরা চাই মানুষ আবার কাগজ কলমের প্রতি ভালোবাসা ফিরে পাক। সুন্দর হাতের লেখা শুধু সৌন্দর্যের প্রকাশ নয়, এটি মনোযোগ ও আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন। সুন্দর হাতের লেখা শুধু একটি দক্ষতা নয়, বরং এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা, ধৈর্য ও সৌন্দর্যের প্রতিফলন ঘটায়। সুন্দর হাতের লেখা একটি শিল্প, আর এই শিল্পই পারে নতুন প্রজন্মকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে।”
প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অনেকে জানিয়েছেন, একাডেমির প্রশিক্ষণের ফলে শিক্ষার্থীদের লেখার মান ও গতির উন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি, হাতে লেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি হওয়ায় তারা এখন বই ও নোট তৈরিতে আরও মনোযোগী হয়ে উঠছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্যোগ শুধু লেখার সৌন্দর্য বৃদ্ধিই নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রশান্তি, মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
..