শিক্ষকদের সততা ও ন্যায়ের সাথে কাজ করার কথা বলায় দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে বেনামে অভিযোগ

শিক্ষকদের সততা ও ন্যায়ের সাথে কাজ করার কথা বলায় দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে বেনামে অভিযোগ
প্রণব কুমার সাহা, মাদারীপুর প্রতিনিধি : শিক্ষকদের সততা ও ন্যায়ের সাথে কাজ করার কথা বলায় দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে বেনামে অভিযোগ দিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুর সদর উপজেলায় ।
জানা যায়, মো. মাসুদ করিম মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হিসাবে যোগদান করেন । যোগদান করে প্রথমে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও অফিস সহকারীদের সাথে মিটিং করে সবাইকে বলেন এখন থেকে শিক্ষা অফিস একটু আলাদাভাবে চলবে। আপনারাকেউ শিক্ষকদের সাথে স্বজনপ্রীতি করবেন না যাতে করে শিশিক্ষরা অনৈতিক কোনো কাজ করার সুযোগ পায়। যার যার ক্লাস্টারের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বলে দিবেন এখন থেকে স্কুলে সময় মত আসতে হবে, স্কুলে এসে ফাঁকি দেওয়া যাবে না, স্কুল চলাকালীন সময় কোন শিক্ষক শিক্ষা অফিসে আসতে পারবে না, যদিও আসে তাহলে যথাযথ কারণ থাকতে হবে, স্কুল চলাকালীন সময় কোন শিক্ষক প্রাইভেট পড়াতে পারবে না। এছাড়াও আরো কিছু নিয়মাবলী মানতে হবে। এবং সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দাতুন নেছা রূপা যেহেতু আপনি ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার ছিলেন অনেকদিন সেহেতু আপনি আমাকে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করবেন। এমন ভাবে কয়েকমাস চলার পর কয়েকজন শিক্ষক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাসুদ করিম ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দাতুন নেছা রূপাকে বদলি করার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠে। দিতে থাকে বিভিন্ন দপ্তরে বেনামে অভিযোগ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে  উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাসুদ করিম ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দাতুন নেছা রূপার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাতেগোনা কয়েকজন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক যারা অনৈতিক কোনো সুযোগ সুবিধা নিতে পারেনি তারা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। গত বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলা কার্যালয়ে ১১ জন শিক্ষকের সাক্ষ্য নেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন। পরে দুই শিক্ষা অফিসারেরও সাক্ষ্য নেওয়া হয়। তদন্তের স্বার্থে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কমিটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক বলেন, যারা এতদিন অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতো এখন এই শিক্ষা অফিসার আসার পর কোনো অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে না পারায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। আমরা সাধারণ শিক্ষক আগেও আমরা
কোনো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করিনি এখনও কোনো সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে চাইওনা। সততা ও ন্যায়ের সাথে কোনো অফিসার এখানে চাকরি করতে চাইলে পারবেনা। কারন শিক্ষকরা রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন । ভালো কোনো অফিসার এখানে বেশিদিন চাকরি করতে পারবে না । উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাসুদ করিম স্যার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দাতুন নেছা রূপা ম্যাডাম খুব ভালো মনের মানুষ ।
মাদারীপুর পুলিশ লাইন্স সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘ওই দুই শিক্ষা অফিসার ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম করেই যাচ্ছে। এজন্যই আমাদের এই প্রতিবাদ।
আরেক সহকারী শিক্ষক মাসুদ সুমন বলেন, ‘আমরা কয়েকজন শিক্ষক মিলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ওই দুই শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেই।
সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মাসুদ করিম বলেন, ভালো কাজ করতে গেলে নানা বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। এতদিন হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করত । আমি শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করে তাদের অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছি।  তাই আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় বেনামে কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ দিয়েছে। যার কোনো ভিত্তিই নেই।
সহকারী সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দাতুন নেছা রূপা বলেন, ‘অভিযোগ তো যে কেউই দিতে পারি। তদন্তে সত্য মিথ্যা উঠে আসবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::