টেকনাফ পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতার-৬

টেকনাফ পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতার-৬
মুহাম্মদ কিফায়তুল্লাহ: কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর আভিযানিক দল টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও ক্যাম্প সামরিক কমান্ডারসহ ৬জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। এসময় বিপূল পরিমাণ দেশী-বিদেশী অস্ত্রসহ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সুত্র জানায়, গত ২১ জুলাই রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল টেকনাফের উপকূলীয় বাহারছড়া-শ্যামলাপুরের গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে উগ্রপন্থী সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ (আরসা) এর শীর্ষ সন্ত্রাসী ও কুতুপালং ৮নং শরণার্থী ক্যাম্পের অন্যতম সামরিক কমান্ডার দিল মোহাম্মদের পুত্র হাফেজ নুর মোহাম্মদ (২৮) কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত হাফেজ নুর মোহাম্মদ ২০১৬ সালে ‘আরসা’ সদস্য আরিফ উদ্দিনের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘আরসা’ এ যোগ দেয়। পরবর্তীতে সে সেকশন কমান্ডারের দায়িত্ব পায়। আরসার সামরিক শাখার প্রধান ওস্তাদ খালেদের সাথে তার বিশেষ সখ্যতা ও নিয়মিত যোগাযোগ গড়ে উঠে। সে কুংফুতে বেল্ট প্রাপ্ত ও বিস্ফোরক তৈরীতে পারদর্শী ছিল। সে আরসা’র অন্যান্য সদস্যদের কুংফু প্রশিক্ষণ দিত। সে আরসা’র সামরিক শাখার প্রধান ওস্তাদ খালেদের কাছ থেকে অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ ও আরসা’র মূল সংগঠক আরিফ উদ্দিন ওরফে হাসেম ওরফে কুইল্লার কাছ থেকে বোমা তৈরীর প্রশিক্ষণ নেয়। পরবর্তীতে সে ২০১৭ সালে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং শরণার্থী হিসেবে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প-৮ এ অবস্থান করতে থাকে। প্রাথমিকভাবে সে ক্যাম্প-৮ এ আরসার হেড জিম্মাদার হিসেবে দায়িত্ব পায়। তার নেতৃত্বেই কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প এর আরসার সদস্যরা খুন, টার্গেট কিলিং, অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করে থাকে।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী পরে বাহারছড়া ও শ্যামলাপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরসার অন্যান্য সন্ত্রাসী ধলা মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ হোসেন জোহার (৩০), ওবাইদুর রহমানের পুত্র মোঃ ফারুক ওরফে হারেস (২৩), জবর মুল্লুকের পুত্র মনির আহমদ (৩৬), অলি আহমদের পুত্র নূর ইসলাম (২৯) এবং হোসেনের পুত্র মোঃ ইয়াছিন (২১) কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের নিকট হতে ১টি এমএম পিস্তল, ১টি বিদেশী রিভলবার, ১টি শর্টগান, ৪টি দেশীয় এলজি, ৩টি দেশীয় রামদা ও গোলা-বরুদসহ নগদ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ‘আরসা’র সাথে সংশ্লিষ্ট থেকে খুন ও অপহরণসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।গ্রেফতারকৃতরা মায়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নাগরিক এবং সে দেশের সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ (আরসা) এর শীর্ষ নেতা ও সক্রিয় সদস্য।গ্রেফতারকৃত হাফেজ নুর মোহাম্মদ কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প অন্যতম এর সামরিক কমান্ডার হিসেবে ‘আরসা’র নেতৃত্ব প্রদান করত। তার নেতৃত্বে ‘আরসা’র ৩০-৩৫জন সদস্য কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প ও তার পাশ্ববর্তী এলাকাসমূহে খুন, অপহরণ, ডাকাতি, মাদক, চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে থাকে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::