কাঠের টুকরো হাতে রেখেই সেলাই দিলেন মাদারীপুর সদর হাসপাতালের নার্স

কাঠের টুকরো হাতে রেখেই সেলাই দিলেন মাদারীপুর সদর হাসপাতালের নার্স

মাদারীপুর প্রতিনিধি
দুই ইঞ্চি আর পাঁচ ইঞ্চি সাইজের দুই টুকরো কাঠ রেখেই হাতে সেলাই দিলেন মাদারীপুর সদর হাসপাতালের এক নার্স। প্রায় দুই মাস অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করে অবশেষে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ-হাসপাতালে দুই দফা অস্ত্রপাচারের পর যন্ত্রণা থেকে মুক্ত মিলে মাদারীপুরের হোগলপাতিয়ার আলাম সর্দারের শিশুপুত্র রাকিব সর্দারের। বিষয়টি জানাজানি হলে টনক নড়ে মাদারীপুরের স্বাস্থ্য বিভাগের। গত বৃহস্পতিবার দোষীদের উপযুক্ত বিচার আর ক্ষতিপূরণ চেয়ে সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আলাম সর্দার।
এদিকে গতকাল শুক্রবার সকালে সিভিল সার্জন মো সফিকুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্তের পিতা আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি তা যাচাই-বাচাই করে দেখবো। যদি সদর হাসপাতালের কারো দোষ পাই, তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ মে শুক্রবার দুপুরে ঘরের মাঁচা থেকে পা পিঁচলে পড়ে যায় মাদারীপুর সদরের আলাম সর্দারের ১২ বছরের সন্তান রাকিব সর্দার। এ সময় গাছের টুকরো হাতের ভিতর ঢুঁকে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় ছুঁটে আসে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। তাৎক্ষণিক কোন চিকিৎসক না পেয়ে অস্তির হয়ে উঠে দিনমজুর আলাম সর্দার। তখন দুই হাজার টাকা দাবী করেন জরুবি বিভাগের নার্স (ব্রার্দার) মো. তোতা মিয়া। উপায়ান্ত না পেয়ে এক হাজার টাকা দিয়ে অনুরোধ করলে ওই নার্সসহ আরো দুই জন মিলে তাড়াহুড়া করে সেলাই করে দেন। এরপর কিছু ওষুধ লিখে বাড়ী পাঠিয়ে দেন। কিন্তু বাড়িতে যাওয়ার পর শুরু হয় তীব্র যন্ত্রণা। এরপর থেকে প্রায়ই আসেন ড্রেসিং করাতে। কিন্তু ব্যথা কমার কোন লক্ষণ না দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানেও উন্নতি চিকিৎসা না পেয়ে ফরিদপুরে ‘রয়েল হাসপাতাল এন্ড ডিজিটাল ডায়গনিস্ট সেন্টারের চিকিৎসক আবু সালেহ আহমেদ সৌরভ অপরেশন করে হাত থেকে দুই টুকরো কাঠ বের করেন। যা প্রায় পাঁচ ইঞ্চি ও দুই ইঞ্চি হবে।
ভুক্তভোগি শিশু রাকিব সর্দার বলেন, ‘আমার হাতে এখনো খুব ব্যথা করে। রাতে ঘুমাতে পারি না। হাতও বাঁকা হয়ে আছে। আমরা অসহায় দেখে ডাক্তাররা ভুল চিকিৎসা করেছে। আমি তাদের বিচার দাবি করি।
অভিযুক্ত মোা তোতা মিয়া বলেন, আমার সেদিন করোনার ডিউটি ছিল। সেখানে থেকে জরুরি বিভাগে এসে দেখি শিশুটা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। তখন তাদের থেকে এক হাজার টাকা নিয়ে সুতা কিনে সেলাই করে দিয়েছি। হাতের ভিতর কিছু ছিল কিনা সেটা বুঝতে পারেনি। আমি ভালো করতে গিয়ে এখন দোষী হচ্ছি। এভাবে আর কারো উপকার করবো না। আমার ভুল হয়েছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের ৮ মাস না পেরোতেই ভাঙন

সিন্ডিকেটের কারনে আলুর দামের উর্ধ্বগতি