প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসন-বিরোধী মনোভাবের কারণে এ বছর ১০ সহস্রাধিক বাংলাদেশিসহ ৬ লক্ষাধিক গ্রীণকার্ডধারীর সিটিজেনশিপ গ্রহণের স্বপ্ন অপূর্ণই রয়ে যাবে। অর্থাৎ প্রচণ্ড আগ্রহ থাকার পরেও তারা কেউই নভেম্বরের নির্বাচনে ভোট দিতে সক্ষম হবেন না। এরফলে অভিবাসী সমাজে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছে।
উল্লেখ্য, করোনার কারণে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউএসসিআইএস (ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস) এর অ-জরুরি সকল কাজকর্ম বন্ধ থাকার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এ কারণে পারিবারিক কোটা, বিনিয়োগ কোটা, বিশেষ ক্যাটাগরিতে গ্রীণকার্ডের ভিসাও স্থগিত রয়েছে।
সিটিজেনশিপের জন্যে ৯/১০ মাস আগে আবেদনকারীদের মধ্যে ১০ হাজারের অধিক বাংলাদেশিও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ইউএসসিআইএস অফিসের পদস্থ এক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে ৩১ আগস্ট এ সংবাদদাতাকে জানান, ট্রাম্পের কঠোর নীতির কারণে অভিবাসীদের গড়া এই যুক্তরাষ্ট্রে আজ অভিবাসীরাই নিগৃহীত। লাখ লাখ অভিবাসীর কাছে থেকে নির্ধারিত অংকের ফি নিয়ে নানা কর্মসূচির আবেদন গ্রহণ করেছি। কিন্তু সে সবের প্রসেসিং যথাযথভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। এটা কোনভাবেই ন্যায়-নিষ্ঠতার আওতায় পড়তে পারে না।
এই কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, সেপ্টেম্বরে সমাপ্ত চলতি অর্থ বছরে সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় পতিত হয়েছে ইউএসসিআইএস। এর জের হিসেবে আর্থিক সংকটেও পড়েছে এই দফতর। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এক ধরনের হতাশার মধ্যে কাজ করছেন।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প জয়ী হবার পরই গ্রীণকার্ডধারীদের মধ্যে সিটিজেনশিপ গ্রহণের হিড়িক পড়ে যায়। কারণ, মামুলি অপরাধের জন্যেও গ্রীণকার্ড কেড়ে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা যায়। তবে সিটিজেন হলে সেটি সম্ভব হয় না। ট্রাম্পের অভিবাসন বিরোধী দমন-পীড়নের আতংকে আগে যারা সিটিজেনশিপ গ্রহণে আগ্রহী ছিলেন না তারাও দলে দলে সেটি করেছেন। এর ফলে গত তিন বছরে সবচেয়ে বেশী মানুষ সিটিজেন হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী করোনার পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এ মাসে ৪ শতাধিক অভিবাসী সিটিজেন হিসেবে শপথ নিয়েছেন। অথচ গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত সিটিজেনশিপের পেন্ডিং আবেদনের সংখ্যা ছিল ৭ লক্ষাধিক। ইউএসসিআইএস’র তথ্য অনুযায়ী মধ্য মার্চে সারা আমেরিকা লকডাউনে যাবার আগ পর্যন্ত এক লাখ ৫৬ হাজার ৮৪৯ জনের আবেদনের প্রসেসিং সম্পন্ন হয়েছিল।
এদিকে, পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণা অনুযায়ী আসন্ন নির্বাচনে ভোটারের মধ্যে ২ কোটি ৩২ লাখ হলেন অভিবাসী। তারা যদি সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটাধিকার প্রদান করেন তাহলে যে কোন প্রার্থীর বিজয়ের ক্ষেত্রে বড় একটি ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে বলে মন্তব্য করেছে এই গবেষণা সেন্টার।