লিভারপুলের ৩০ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতিয়েছেন কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। এর আগের মৌসুমে সাফল্যের পালকে যোগ করেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা।
কিন্তু এখনই অবসরের ভাবনায় পেয়ে বসেছে এই জার্মান কোচকে।
লিভারপুলের সঙ্গে ক্লপের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর অনিচ্ছার কথা জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই না, এরপর ফুটবলে না ফেরার ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন তিনি। ‘স্পোর্ট বাজার’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্লপ বলেন, ‘(বর্তমান চুক্তি শেষে) আমি এক বছর বিশ্রাম নেব এবং নিজেকে প্রশ্ন করব আমি ফুটবল মিস করছি কি না। উত্তর যদি না হয়, তাহলে সেটাই হবে কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের সমাপ্তি। ’
ক্লপের এমন মন্তব্যে লিভারপুল সমর্থকরা হতাশ। কারণ এমন অসাধারণ এক কোচকে এত দ্রুত হারাতে চায় না তারা। ২০১৫ সালের অক্টোবরে দায়িত্ব নেওয়া ক্লপকে অন্তত এক যুগ ডাগআউটে দেখতে চাইবেন ‘অল রেড’ সমর্থকরা। তবে শীর্ষ ক্লাবের দায়িত্ব সামলানো অনেক বড় মানসিক চাপের ব্যাপার। তাছাড়া মিডিয়া আর সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপ তো আছেই।
ক্লপের ব্যক্তিত্ব লিভারপুলের একধরনের ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করেছে। সবার সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতে পারা এবং খেলোয়াড়দের আগলে রাখার কারণে পুরো ক্লাবের তার অবস্থান সত্যিকারের অভিভাবকের মতো। ফলে তার উপস্থিতি ক্লাবটির জন্য কত গুরুত্ব বহন করে তা বলাই বাহুল্য। তবে এখনও যেহেতু চার বছর বাকি আছে, ফলে সমর্থকদের এত দ্রুত হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
শীর্ষ পর্যায়ের ক্লাবগুলোর কোচদের জন্য আধুনিক ফুটবল বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। খেলোয়াড়রা ছুটি কাটানোর যথেষ্ট সুযোগ পেলেও কোচদের জন্য তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয় না। আবার একবার দায়িত্ব ছাড়লে ফের চাকরি পাওয়াও সহজ নয়। কিন্তু ক্লপের মতো কোচের চাকরির অভাব হওয়ার কথা নয়। তিনি বরং অনেকটা পেপ গার্দিওলা কিংবা জিনেদিন জিদানের পথে হাঁটতে চাইছেন।
২০১২ সালে বার্সার সঙ্গে ৪ বছরের বন্ধন ছিন্ন করার পর অবসর কাটাতে এক বছর নিউইয়র্কে অবস্থান করেন গার্দিওলা। সেখানে সাবেক দাবা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন গ্যারি ক্যাসপারভের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব হওয়ার সুবাদে একসময় তার অনুপ্রেরণায় বার্সা-পরবর্তী কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আবার কোচ হিসেবে রিয়াল মাদ্রিদকে তিন মৌসুমে টানা তিন চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জেতানোর পর জিদানও ২০১৮ সালে বিদায় নেন। তবে ১০ মাস পর ফের দায়িত্ব ফিরে ক্লাবকে লা লিগার শিরোপা জিতিয়ে নিজের সামর্থ্যের স্বাক্ষর রেখেছেন এই ফরাসি কিংবদন্তি।