ফ্রি ফায়ার-পাবজি আসক্তি, বই বিমুখ শিক্ষার্থীরা

ফ্রি ফায়ার-পাবজি আসক্তি, বই বিমুখ শিক্ষার্থীরা
অনেক অভিভাবকের অভিযোগ, ফ্রি ফায়ার গেমে আসক্তদের খাওয়া-ঘুম তো নেই-ই বরং তাদের সময় নেই কারোর সঙ্গে গল্প বা কথা বলার। এভাবে চললে তারা শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া ফ্রি ফায়ারে ব্যবহৃত বিভিন্ন চরিত্র ও অস্ত্র ব্যবহৃত হয়, যা সম্পর্কে অনেক পেশাদার সন্ত্রাসীরাও ওয়াকিবহাল নয়।
এই খেলার এক একটা চরিত্র কিনতে অন্তত ৪০০-৫০০ টাকা খরচ করতে হয় তাদের। এই অর্থ তারা কোথা থেকে সংগ্রহ করে তা নিয়েও আতঙ্কিত অনেক অভিভাবক। ছোট বাচ্চারা বাবা-মার কাছে জেদ ধরে টাকা আদায় করে। না দিলে আত্মহত্যার ঘটনা পর্যন্ত ঘটতে পারে। মায়ের সঙ্গে অনেকের বাগবিতণ্ডার জেরে মারামারির মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে।শহরের কেশব মোড়ের একজন অভিভাবক সুকান্ত মিত্র বলেন, ‘ইন্টারনেট ব্যবহার করেই তো এসব খেলতে হয়। আর ইন্টারনেট ডাটার যে দাম কি করে পেরে উঠবে অভিভাবকরা? তাছাড়া এই খেলার খেলোয়াড়রা যেভাবে কথা বলে তা দেখলে মনে হবে পাগল। সারাদিন বকাবকি করে। সারাদিনের এই বকাবকি তাদের ঘুমের ঘোরেও প্রভাব ফেলে। দিনে ব্যবহৃত বিভিন্ন রকমের শব্দ ঘুমের ঘোরেও বলতে শোনা যায়। ’অভিভাবক সুজন শেখ বলেন, ‘মূলত এই খেলার সুযোগ এসেছে সরকার অনলাইন ক্লাস শুরু পদ্ধতি থেকে। ক্লাসগুলো যদি অনলাইনে না দিয়ে কোনো টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সর্বশেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতো, তবে আমার মনে হয় ভালোই হতো। ’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘অনেক ছেলে-মেয়েরা অনলাইন ক্লাসের নাম করে নতুন মোবাইল কিনেছে। কিন্তু ক্লাসে তাদের বিন্দুমাত্র মনোযোগ নেই। ’
মাগুরার একটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাজহারুল হক লিপু  বলেন, আমার মনে হয় এভাবে চলতে দেওয়াটা ভালো ফল বয়ে আনবে  না। দেশ, সমাজ, জাতি অতিদ্রুত ধ্বংসের কবলে পড়তে যাচ্ছে। ব্লু -হোয়েলের মতো ভয়ঙ্কর রূপ নেওয়ার আগেই এই খেলা বন্ধ করা দরকার। সরকারের উচিত এই ব্যাপারেটিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা।

জানা যায়, শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। আলোচনায় ওই দুই গেমের আসক্তি নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়। এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম দুটি বন্ধে দুই মন্ত্রণালয় থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। এটি সত্য যে ওই দুটি গেম কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের মধ্যে আসক্তি তৈরি করেছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই দুটি গেম কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের মধ্যে আসক্তি তৈরি করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে বন্ধ করতে গেলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে। তাই ধীরে সুস্থে বিকল্প পদ্ধতিতে গেম দুটি বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে হ্যাঁ, যারা এ ধরনের গেমে আসক্ত তারা ভিপিএনসহ নানা বিকল্প উপায়ে গেমটি খেলতে পারে। আমরা সেসবও বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করব।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

১৬৯ কর্মচারিকে চাকরিচ্যুত করলো রাসিক

মেহেন্দিগঞ্জ পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কর্মসূচি-৩ পরকল্পের চেক বিতরণ