নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা শহরের বাতাসে দূষিত বস্তুকণার পরিমাণ বিপজ্জনক আকার ধারণ করেছে। সরকারি ছুটির দিন গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় রাজধানীতে বায়ুদূষণ গিয়ে ঠেকে ৪৬৯ পিএম-২.৫। ফলে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে উঠে এসেছে ঢাকা। দ্য ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স প্রজেক্ট (একিউআইসিএন) এ তথ্য দিয়েছে। একিউআইসিএনের রিপোর্ট বলছে, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বায়ুদূষণের মাত্রা ৩০০ পিএম-২.৫ ছাড়িয়ে গেলে সেই দূষণকে বিপজ্জনক বলা হয়ে থাকে। বাতাসে এই মাত্রার দূষণে যে কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এ সময় কারও বাইরে যাওয়া উচিত নয়। বৈশ্বিক মান অনুযায়ী বাতাসে এমন দূষিত কণার উপস্থিতি থাকলে স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করার বিধান রয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থা তা করেনি। এদিকে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের গড় দূষণ মাত্রায়ও বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ হিসেবে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আরেক বায়ু পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার এ তথ্য দিয়েছে। আইকিউএয়ারের তথ্যমতে, বাংলাদেশে বায়ুর গড় দূষণ ১৬২ পিএম-২.৫। এরপর রয়েছে পাকিস্তান, তাদের গড় দূষণের মাত্রা ১৫৩ পিএম-২.৫। তৃতীয় স্থানে আছে ভারত, তাদের গড় দূষণের হার ১৪১ পিএম-২.৫। গড় দূষণ ১২৮ পিএম-২.৫ নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে মঙ্গলিয়া এবং সমপরিমাণ দূষণ নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে আফগানিস্তান। অর্থাৎ বিশ্বের শীর্ষ দূষিত বায়ুর পাঁচটির মধ্যে চারটি দেশই দক্ষিণ এশিয়ার। ঢাকার বাসিন্দাদের জন্য আইকিউএয়ারের পরামর্শ- এ সময়ে বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে, ঘরের দরজা-জানালা খোলা রাখা যাবে না, এয়ার পিউরিফাই ব্যবহার করতে হবে এবং অতি প্রয়োজন ছাড়া চলাফেরা না করা। আইকিউএয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী- গত বৃহস্পতিবার রাত ১টায় ঢাকার বায়ুদূষণ বেড়ে যায়। রাত ২টায় তা ৪৫৪ ছাড়িয়ে যায়। সকাল ১০টা পর্যন্ত বায়ুদূষণের মাত্রা কিছুটা উঠানামা করলেও বাতাসে দূষিতকণার পরিমাণ বিপজ্জনকই রয়ে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে প্রতি বছরই ঢাকার বাতাসের দূষণের মাত্রা গুরুতর হয়ে উঠে। দূষিত বায়ুর শহরের বৈশ্বিক তালিকায় শীর্ষ ১০ এর মধ্যে থাকে ঢাকার নাম। তবে মহামারি করোনার কারণে চলাচল সীমিত এবং সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় গত বছরের জুন-জুলাইয়ে ঢাকার বায়ুমান উন্নত হয়েছিল। গত বছর জুনের শেষ সপ্তাহে দূষণ তালিকায় ৫৭তম অবস্থান ছিল রাজধানী ঢাকা। তবে লকডাউন শেষ হতেই ফের বায়ুদূষণ বাড়তে শুরু করে। ফলে রাজধানীর বাতাসের মানের চরম অবনতি হয়েছে।