ববি প্রতিনিধি:ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগ এনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী আব্দুল কাদির সোহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এক নারী শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত সোহান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থবর্ষের শিক্ষার্থী। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২ টায় ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী নিজেই বাদী হয়ে বরিশাল বন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যা পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা এজাহারভুক্ত হয়।মামলায় অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহানকে গ্রেফতার করেছে বন্দর থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসতেন মামলায় অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহান। ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর ৬ষ্ঠ তলায় সহপাঠির সাথে পড়াশুনা করছিলেন। ওই সময়ে অর্থাৎ বেলা সাড়ে ৪ টার দিকে অভিযুক্ত সোহান মেয়েকে ফোন করে সিড়িতে নিয়ে যায়। তারপর দুই হাত ধরে ভুক্তভোগী নারীকে টেনে হিচড়ে ৬ষ্ঠ তলা সিড়ির উপরের ছাদে নিয়ে যাওয়া হয়। ৬ষ্ঠ তলার সিড়ির উঠার পথে বেঞ্চের উপর নারী শিক্ষার্থীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষন করার চেষ্টা করে। দুই হাত দ্বারা তাকে (সোহান) প্রতিরোধ করিলে সে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। ভুক্তভোগীর বাম হাতে কব্জির উপরে বেঞ্চের কোনায় আচড় লেগে সামান্য চামরা ছিলে যায়।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, দুজনের মধ্যে চারমাসের অধিক সময় প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তবে তাদের মধ্যে তেমন গভীর সম্পর্ক ছিলো না। একপর্যায়ে শোনা যায় তাদের মধ্যে অপ্রীতিকর একটি ঘটনা ঘটেছে। পরে ঘটনার সময়ে মেয়েটি কান্না করতে করতে চিৎকার দেন। চিৎকার শুনে অন্যান্য সহপাঠীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে ভুক্তভোগী ও সহপাঠীদের নিয়ে নিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও ছাত্র উপদেষ্টা কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর কবির এর মাধ্যমে প্রক্টরিয়াল বডি বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করে। একপর্যায়ে দুই বিভাগের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে কয়েক দফায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুটি পক্ষের সাথে কথা বলেন। একপর্যায়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ও উদ্বেগের বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়। সর্বশেষ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা শেষে প্রক্টর,দুই বিভাগের শিক্ষক ও ভুক্তভোগী থানায় এসে ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী ।
অথচ গতকালকে অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহান ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা অস্বীকার করে জানান, তারসাথে আমার দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। আমি তাকে খুঁজতে যাই।একপর্যায়ে লিফ্টের ৬ষ্ঠ তলায় গেলে তাকে পাই।এবং তার সাথে বাকবিতন্ডা জড়িয়ে পরি। কিন্তু ধর্ষন চেষ্টার কোন ঘটনাই ঘটেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ টি এম রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি জানার সাথে সাথেই আলোচনা করি ও উপাচার্য মহোদয়কে জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীকে একাডেমিক শাস্তি যাতে হয় সে বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে। পাশাপাশি আইনের সহায়তায় মেয়েটির পাশে থাকবেন বলে জানান তিনি।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি গ্রহণ করেছি। আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#