মাদারীপুর মিউজিয়াম পরিদর্শন করলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো: সামসুল আরেফিন। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে তিনি মিউজিয়াম এর নিদর্শনসমূহ ঘুরে দেখেন ও পরিদর্শন বহিতে তার অনুভূতি লিপিবদ্ধ করেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ সামসুল আরেফিন তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করে জানান, মাদারীপুর জেলা প্রশাসন জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে মাদারীপুরসহ সারা দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ করার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা অতুলনীয়। জাদুঘরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন জায়গা পেয়েছে ও আরও নিদর্শনসমূহ সংগ্রহ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ভবিষ্যতে এই জাদুঘর বাংলাদেশে একটি সমৃদ্ধ জাদুঘরে পরিণত হবে।” তিনি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খানকে ধন্যবাদ জানান। মিউজিয়াম পরিদর্শনকালে মাদারীপুর মিউজিয়ামের কিউরেটর ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল ইসলাম তার সাথে ছিলেন।
উল্লেখ্য, মাদারীপুরসহ সমগ্র দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন ‘মাদারীপুর মিউজিয়াম’ নামে এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেছে। ৩১ মার্চ ২০২৩ তারিখে তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শাজাহান খান এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে মাদারীপুর মিউজিয়াম উদ্বোধন করেন। এ সময় মাদারীপুর জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও বিভিন্ন দপ্তরের দপ্তর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। জাদুঘর প্রতিষ্ঠার জন্য জেলা প্রশাসনের মালিকানাধীন ঐতিহাসিক পুরাতন ট্রেজারি ভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়েছে। প্রায় শতবর্ষী এ ভবন মাদারীপুর জেলার একমাত্র বৃটিশ আমলের সরকারি স্থাপত্য নিদর্শন যা অদ্যবধি টিকে আছে। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে এ ভবনের নির্মান কাজ শুরু হয়। ১৯৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধে এ ভবনের রয়েছে অনন্য ঐতিহাসিক অবদান। তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক সৈয়দ রেজাউল হায়াত তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মাদারীপুর ট্রেজারিতে রক্ষিত থ্রি নট থ্রি রাইফেলগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে তুলে দেন। বীরমুক্তিযোদ্ধারা প্রতিদিন ট্রেজারি থেকে অস্ত্র নিয়ে যেতেন ও প্রশিক্ষণ শেষে পুনরায় ট্রেজারিতে অস্ত্র জমা রেখে যেতেন। এই উদ্যোগের ফলে মাদারীপুর জেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি সুসংগঠিত রূপে গড়ে উঠে। জনসাধারণের মধ্যে প্রতিরোধ যুদ্ধের জন্য আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। অচিরেই মহকুমা প্রশাসক সৈয়দ রেজাউল হায়াত ও মহকুমা ট্রেজারি ভবন মাদারীপুর জেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ও সংগঠনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।