প্রাক মৌসুমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ না করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে

প্রাক মৌসুমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ না করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে
নিউজ ডেস্ক : মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই বৃষ্টি শুরু হওয়ায় এবার ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের সম্ভাবনা বেশি। সেদিক থেকে প্রাক মৌসুমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে বলে মন্তব্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।রোববার (২৮ মে) সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডেঙ্গু বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির। এ সময় তিনি সিটি করপোরেশনকে আরও বেশি তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান।সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক নাজমুল ইসলাম বলেন, নগরায়ণের কারণে ঢাকা মহানগরে রোগীর সংখ্যা বেশি। আমাদের পরিসংখ্যান না দেখে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা শহরে ৯ ধরনের গবেষণা করে থাকি। এসব গবেষণার মাধ্যমে ডেঙ্গুর পরিস্থিতি দেখি এবং পরামর্শ ও চিকিৎসা দিয়ে থাকি।এদিক ঢাকা মহানগরীতে রোগী বাড়লেও কোন এলাকায় বেশি সে সম্পর্কে জানতে চাইলে কোনো তথ্য দিতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।এ ব্যাপারে নাজমুল ইসলাম বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় যেখানে ঘনবসতি সেখানে মশার উপদ্রব বেশি। তবে নির্দিষ্ট করে কোন এলাকায় সবচেয়ে বেশি সেটি বলা এ মুহূর্তে কঠিন। রোগীদের তথ্য যাচাই করে তারপর বলা যাবে। আমরা পুরো ঢাকা শহরকেই বিবেচনায় নিচ্ছি। আমাদের কাজ রোগী ব্যবস্থাপনা। ডেঙ্গু কোথায় বেশি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব স্থানীয় সরকারের।হাসপাতালে রোগী জটিলতার ব্যাপারে অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন বলেন, ঢাকা শহরে অপরিকল্পিত নগরী গড়ে উঠছে। ঠিক ব্রাজিলের মতো। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে আমরা প্লাটিলেটকে সামনে আনি। অথচ এটি সেভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমাদের উচিত সচেতনতায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া।ডেঙ্গু পরীক্ষার ফ্রি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু সংক্রমণের পরীক্ষা সর্বোচ্চ মূল্য ৫০০ টাকা ও সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরীক্ষা ১০০ টাকা। কোনো হাসপাতালে এর বেশি নেওয়া হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডেঙ্গু পরীক্ষাসহ চিকিৎসায় আমরা সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন করে দিয়েছি। এ গাইডলাইন অনুযায়ী সবাইকে চিকিৎসা দিতে হবে। প্লাটিলেট ব্যবহার নিয়েও গাইডলাইনে নির্দেশনা রয়েছে।ঢাকা মহানগরীর পর দেশের সবচেয়ে বেশি রোগী চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজারে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান বক্তারা।তারা বলেন, জেলার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলতি বছর ১ হাজার ৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে এ ক্যাম্পে ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা কঠিন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানুষের ঘনত্ব বেশি এবং পানি সংকটের কারণে দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে পানি পাত্রে জমিয়ে রাখা হয়, আর এ পানিতেই মশা জন্ম নেয়। তবে ভাষাগত সমস্যা ও ক্যাম্পের ভেতরে প্রবেশজনিত সমস্যার কারণে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সেখানকার উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের টিম গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::