টুঙ্গীপাড়া থেকে, নূরন নবী বাবুল
বঙ্গবন্ধুর টুঙ্গীপাড়ার আদিবাড়ী থেকে বড়জোর তিনশ ফিটদূরে রাস্তারপাশে বসে আছি কথা বলছি শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং তাঁর সহধর্মিণী রাশিদা বেগমের সাথে। তাদের কথামত একজনের বয়স ৮০ বছর অন্য জন ৭৩ বছর । সেদিনের সেই নারকীয় ঘটনার কথা জানতে চাইলে তাঁরা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেন। উভয়ে বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার দেখেছেন। কথা বলেছেন।কাঠের পুলের পাশে শেখ মোয়াজ্জেম হোসেনদের দোকান ছিলো। তিনি তার পিতা শেখ তৈইয়্যূবুদ্দিনকে দোকানের কাজে সাহায্য করতেন তিনি বলছিলেন রজব আলী নামে একজন এসে ৫৭০ সাবান নিয়ে যান। যে সাবান দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে কোন রকমে গোসল করি দাফন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর মরদেহ টুঙ্গীপাড়ায় হেলিকপ্টার থেকে নামানোর পর সাধারণ মানুষদের কাছে ভিড়তে দেই নাই সামরিকবাহিনীর লোকজন। যার কারনে শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন জানাযায় অংশগ্রহণ করতে পারেন নাই। তাঁরা আর কথা বলতে পারছিলেননা। মনে হচ্ছিল নানা বিধকষ্টে তাঁদের বুক ভেঙ্গে যাচ্ছে। শিশুর মত অঝর ধারায় কাঁদছিলেন এই বয়স্ক শিশুরা। ব্যথিত মনে সেখান থেকে বিদায় নিলাম। যে যাই বলুক এই গ্রহের এই বদ্বীপে একজন শেখ মুজিব জন্মে ছিলেন।বহুত্যাগ-রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলাদেশ । যা আমাদের এযাবতকালের শ্রেষ্ঠতম অর্জন।কত জনেই কত কিছু জেনারেল-সচিব-মন্ত্রী-শিল্পপতি আর ও কত কিছু। কেউউ পচেপড়া ভোগবিলাস, নীতিনৈতি তাহীন আকাশচুম্বী অমানবিকতা যা বাংলার কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের কল্পনার ও বাইরে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি মুক্তি পেয়ে দেশেফিরে তাঁর সাড়েতিন বছরের জীবনে বারবার বলেছিলেন দেশের বঞ্চিত মানুষের অর্থনৈতিকমুক্তির কথা । তাঁর কথায় ‘চোরেনাশোনে ধর্মেরকাহিনী’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্ম ভিটায় ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি দাঁড়িয়ে সেই সব কথা ফিরেই মনে আসছিলো।