আরও ১৬ জেলায় বন্যার আশঙ্কা 

আরও ১৬ জেলায় বন্যার আশঙ্কা 
নিউজ ডেস্ক : আগামী ১০ দিনে দেশের মধ্যাঞ্চলেও বন্যা বিস্তৃতি লাভ করতে পারে। এক্ষেত্রে প্লাবিত হতে পারে আরও অন্তত ১৬টি জেলার নিম্নাঞ্চল।বর্তমানে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণায় বড় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, আগামী ২২ জুন নাগাদ দেশের প্রায় সব বন্যাপ্রবণ নদ-নদীর পানি সবচেয়ে বেশি হারে বাড়বে। এরপর কোথাও কোথাও কমবে। ফলে আরও নতুন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।জুনের চলতি সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশ ও উজানের অববাহিকাসমূহের স্থানসমূহে সামগ্রিকভাবে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে দেশের প্রধান নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকার কিছু জেলায় স্বল্পমেয়াদী থেকে মধ্যমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা: বাংলাদেশ উত্তরাঞ্চল ও উজানের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় অবস্থিত ভারতের অরুণাচল ও আসামে আগামী ১৫ দিনে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টিপাতের প্রভাবে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। ফলে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ও পাবনা জেলায় ৭-১০ দিন মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় ইতোমধ্যে কুড়িগ্রামের চিলমারী প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা এবং ধরলা নদীসমূহের পানির সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও লালমনিরহাট জেলায় ৫-৭ দিন মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

গঙ্গা অববাহিকা: গঙ্গা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে অপরদিকে পদ্মা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। যার ফলে জুন মাসের চতুর্থ সপ্তাহে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পপেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
মেঘনা অববাহিকা: বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মেঘনা আববাহিকা ও তদসংলগ্ন ভারতের মেঘালয় ও বরাক অববাহিকায় ১৫ দিনে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত এবং সময় বিশেষে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টিপাতের ফলে সুরমা, কুশিয়ারাসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা ইতোমধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকা: চলতি মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য আববাহিকার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রেক্ষিতে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা কম।
পাউবো জানিয়েছে, বর্তমানে ১০টি নদ-নদীর পানি ১৩টি স্থানে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি হাতিয়া ও চিলমারীতে, দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরীতে, ধরলার পানি কুড়্রিগামে, তিস্তার পানি ডালিয়ায়, সুরমার পানি কানাইঘাট, সিলেট ও সুনামঞ্জে, সারিগোয়াইন নদীর পানি সারিঘাটে, পুরাতন সুরমার পানি দেরাইয়ে, যাদুকাটা নদীর পানি লরেরগড়ে, সোমেশ্বরীর পানি কলমাকান্দায় ও ভুগাই নদীর পানি নাকুগাঁওয়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সবেচেয়ে বেশি হারে বাড়ছে সুরমা, যাদুকাটা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি। 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

বাকেরগঞ্জে ভোট জালিয়াতির পরিকল্পনাকারী আবদুল হক পুলিশ হেফাজতে

হামাসের দাবি মানবে না ইসরায়েল: নেতানিয়াহু