‘ডাক্তাররা যদি রাজনীতি করে আমরা কী করব’

‘ডাক্তাররা যদি রাজনীতি করে আমরা কী করব’
নিজস্ব প্রতিবেদক  : সংসদ অধিবেশেনে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে আবারও ব্যাপক সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের সদস্যরা। বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন ও সেখানকার শিক্ষার মান, চিকিৎসকদের রাজনীতি করা ও প্রাইভেট প্র্যাকটিস, বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যয়—এমন বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সদস্যরা।বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বিল পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা স্বাস্থ্য খাত ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেন।চিকিৎসকদের রাজনীতি করার প্রসঙ্গে তুলে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, “বিএনপি করে গিয়েছিল ড্যাব, আওয়ামী লীগ এসে করেছে স্বাচিপ। সে ক্ষেত্রে আমরা কী কারণে বসে থাকছি? এই আইনের মধ্যে যদি উনি আনতো যে ডাক্তাররা এবং বৈজ্ঞানিকেরা রাজনীতি করতে পারবে না, তাহলে খুব খুশি হতাম। কিন্তু সেটা আনা হয় নাই। ডাক্তাররা যদি এই দেশে রাজনীতি করে, তাহলে আমরা কী করব? আমাদের কাজটা কী? ওনারা চলে আসুক রাজনীতি করতে। যারা ভালো ছাত্র তারা ডাক্তারি পড়ে, কিন্তু তারা যদি রাজনীতি করে, তাহলে আমরা সেবাবঞ্চিত হচ্ছি। ”জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “অ্যাডমিন ক্যাডারের লোক, জজ বা পুলিশ ক্যাডারের লোক তো চাকরি করে প্রাইভেট কোনো বিষয়ে কনসালটেন্সি করতে পারে না। ডাক্তাররা কেন বিসিএস অফিসার হয়ে ডিউটির পর প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে? সে ক্ষেত্রে তার যে মূল কাজ সেটা ঠিক থাকে না। এটা দীর্ঘদিনের একটা সমস্যা। মন্ত্রীকে বলবো যদি উপকার করতে চান তাহলে ডাক্তার সাহেবদের প্রাইভেট প্যাকটিস দয়া করে বন্ধ করার চেষ্টা করেন। জনগণের পয়সা দিয়ে তাদের বেতন দেবেন, তারা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করবে—এটা আমরা করতে পারি না। ”বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, “বর্তমানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যে বেহাল দশা। দেশের পঞ্চাশ বছর অতিক্রম করেছি। আমরা এখনো পর্যন্ত সরকারি হাসপাতাল এবং বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে কোনো পার্থক্য করতে পারিনি। যারা আজকে সরকারি হাসপাতালে কর্মরত তারাই আজকে বেসরকারি হাসপাতালের ব্যবসা করছেন। হাসপাতালের পর্দা কেনা হয় ৩৮ লাখ টাকা দিয়ে। স্বাস্থ্য খাতের এত অনিয়ম, দুর্নীতির কথা আমরা বলে যাচ্ছি, কিন্তু কোনো ভালো হয় না। এতগুলো বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন, এইগুলো কি মানসম্মত?”বিএনপির আরেক সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, “করোনাকালে অর্থনৈতিকভাবে কতগুলো পরিবার পঙ্গু হয়ে গেছে, সেই খবর কি আমাদের কাছে আছে?  করোনাকালে হাতেগোনা কিছু রিপোর্ট এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে—করোনায় সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় পড়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে নিরুপায় হয়ে মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। অনেকে হয়তো বেঁচে গেছেন কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন। করোনার আগে যেখানে মধ্যবিত্ত ছিল ৭০ শতাংশ সেখানে মধ্যবিত্ত নেমে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। দরিদ্র মানুষ যেখানে ছিল ২০ শতাংশ সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ শতাংশ। বেসরকারি মেডিক্যালে গিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার ইতিহাস কিন্তু নতুন কিছু নয়। করোনার সময় যে কয়টি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে মানুষকে সর্বস্বান্ত করার অভিযোগ এসেছে তার মধ্যে শীর্ষে আছে সরকার দলীয় একজন সংসদ সদস্যের হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজ। ”

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন