মুহিব্বুল্লাহ ১৯৩৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ির দৌলতপুর ইউনিয়নের বাবুনগর গ্রামের এক আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হারুন বাবুনগরী বাবুনগর মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা এবং মা উম্মে ছালমা। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।তার বাবার প্রতিষ্ঠিত আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে তার প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি হয়। এ মাদরাসায় আট বছর লেখাপড়া করার পর ১৯৪৯ সালে তিনি আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় ভর্তি হন। হাটহাজারী মাদরাসায় দুই বছর লেখাপড়া করে উচ্চশিক্ষা লাভের উদ্দেশে ১৯৫২ সালে তিনি ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ চলে যান। ১৯৫৯ সালে দেওবন্দ মাদরাসায় দাওরায়ে হাদিস (স্নাতক) সম্পন্ন করে আরও এক বছর উচ্চতর হাদিস শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন।১৯৬০ সালে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে দেশে ফিরে তিনি বাবার পরিচালিত আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবনের সূচনা করেন। ১৯৮৬ সালে বাবার মৃত্যুর পর তিনি ওই মাদরাসার মহাপরিচালক নিযুক্ত হন।হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি নায়েবে আমির ছিলেন। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর তিনি সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচিত হন। ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যুর পর তিনি সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।তিনি সৈয়দ ফজলুল করিমের জীবদ্দশায় ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের (বর্তমান নাম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ) প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। ফজলুল হক আমিনীর জীবদ্দশায় তিনি ইসলামী ঐক্যজোট এবং ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরে তিনি ইসলামী ঐক্যজোটের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সখ্যতার অভিযোগ এনে ২০১৮ সালে তিনি ঘোষণা দিয়ে এ সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেন।একই সঙ্গে কওমি সনদের সরকারি স্বীকৃতি নিয়ে মতবিরোধের কারণে তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশসহ সব সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেন। শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর তিনি হেফাজতে ফেরেন এবং সংগঠনটির আমির হবার সম্ভাবনা থাকলেও ভাগিনা জুনায়েদ বাবুনগরীর আত্মত্যাগের মূল্যায়ন দিতে তিনি তা হতে রাজি হননি। তিনি ১৯৬০ সালে ফটিকছড়ি থানার ধর্মপুরস্থ মরিয়ম বেগমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০২১ সালের ৪ আগস্ট তার স্ত্রী মৃত্যুবরণ করেন। তাদের তিন ছেলে ও আট মেয়ে রয়েছে।