নিজস্ব প্রতিবেদক : চলচ্চিত্র জগতে পা রেখেই অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন শুরু করেন শামসুর নাহার স্মৃতি ওরফে স্মৃতিমনি ওরফে পরীমনি। নিয়মিত মাদক সেবনের অভ্যাস থেকেই বাসায় গড়ে তুলেন মিনিবার।র্যাব জানায়, গ্রেফতার পরীমনির কাছে মাদক সেবনের একটি লাইসেন্সের কপি পাওয়া গেছে, তবে সেটি মেয়াদোত্তীর্ণ। এছাড়া তার বাসা থেকে যে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করা হয়েছে, তা কখনোই লাইসেন্স কাভার করে না।পরীমনির ফ্ল্যাটে নিয়মিত আয়োজন করা হতো ঘরোয়া পার্টির। সেখানে মদের সাপ্লাই করতেন গ্রেফতার নজরুল ইসলাম রাজ। রাজসহ অনেকে তার বাসায় মাদকসেবন ও পার্টিতে অংশ নিতেন।বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে র্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন।তিনি বলেন, গত ৩ আগস্ট রাতে শরিফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান এবং তার সহযোগী মাসুদুল ইসলাম ওরফে জিসানকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজধানীর অভিজাত এলাকার গুলশান, বারিধারা ও বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টি আয়োজনের বেশ কয়েকটি স্থানের তথ্য পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর অভিযানে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানী এলাকায় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে পরীমনি (২৬) ও তার সহযোগী নজরুল ইসলাম ওরফে রাজসহ (৩৯) ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতার বাকি দুইজন হলেন-পরীমনির ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম দীপু (২৯) এবং রাজের ম্যানেজার মো. সবুজ আলী (৩৫)।গ্রেফতার পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পিরোজপুরের কলেজে (এইচএসসি) জীবনে অধ্যায়নরত অবস্থায় চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। তিনি ২০১৪ সালে চিত্র জগতে অন্তর্ভুক্ত হন। এ পর্যন্ত তিনি ৩০টি সিনেমা এবং ৫/৭টি টিভিসিতে অভিনয় করছেন।পিরোজপুর থেকে ঢাকায় এসে চিত্র জগতে একটি দৃঢ় অবস্থান তৈরিতে গ্রেফতার নজরুল ইসলাম রাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে তিনি জানান।গ্রেফতার পরীমনি ২০১৬ সাল হতে অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়েন। তার ফ্ল্যাট হতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নিয়মিত অ্যালকোহল সেবন করে থাকেন। মাত্রাতিরিক্ত সেবনের চাহিদা মেটানোর লক্ষে বাসায় একটি মিনি বার স্থাপন করেছেন। মিনিবার থাকায় তার ফ্ল্যাটে ঘরোয়া পার্টি আয়োজন করতেন। গ্রেফতার নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকের সরবরাহ করত এবং পার্টিতে অংশগ্রহণ করতেন।এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, কারো বাসায় মিনি বার থাকা আইন সিদ্ধ নয়। তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন যে, তিনি অতিমাত্রায় মাদকাসক্ত ছিলেন। পরীমনির বাসায় রাজের সরবরাহ করা মাদকে ও আয়োজনে নিয়মিত ডিজে পার্টির আয়োজন করা হতো। কিন্তু পরীমনির মাদকের একটি লাইসেন্স আমরা পেয়েছি কিন্তু সেটি মেয়াদোত্তীর্ণ। তাছাড়া সেই লাইসেন্স অনুযায়ীও তিনি মিনি বার পরিচালনা বা বিপুল পরিমাণ মাদক রাখতে পারেন না।ফেসবুক লাইভে আইন-শৃঙ্খল বাহিনী নিয়ে পরীমনির বিরূপ মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি ফেসবুক লাইভে এসে কেন এ ধরনের বিভ্রান্তকর ও বিরূপ মন্তব্য করেছেন তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। র্যাব যখন অভিযান করে তখন র্যাবের গোয়েন্দা শাখা, সাদা পোশাকে সদস্যরা নিয়জিত থাকেন। আমরা প্রাথমিকভাবে মনে করছি তিনি সংক্ষুব্ধ ছিলেন। তবে আমরা বিষয়টি তদন্ত করবো, তার অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিলো কিনা সেটাও তদন্ত করে দেখবো।