বরগুনা: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে বরগুনায় মৎস্য ও কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বেড়িবাঁধের বাইরে কাঁচা বসত ঘর, আবাসন জোয়ারের পানির চাপ আর বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে।বেড়িবাঁধের বাইরে পরিবার রয়েছে খাদ্য সংকটে। বসতঘর-রান্নাঘর তলিয়ে যাওয়ায় রান্না বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ পরিবারে।বরগুনায় অতিবৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি তলিয়ে গেছে কৃষি জমি। এছাড়া মাছের ঘের তলিয়ে গিয়ে সাড়ে ৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, টানা বর্ষণে বরগুনার ছয়টি উপজেলায় ৮ হাজার ৩০০ হেক্টর আমনের বীজতলা পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও ৪ হাজার ৭৫৬ হেক্টর আউশ ক্ষেতের মধ্যে ৩ হাজার ৩০৩ হেক্টর আউশের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ৪১৩ হেক্টর পানের বরজের মধ্যে ২১৫ হেক্টর পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও লাউ, কুমড়া, শসা, ঝিঙাসহ ১ হাজার ২৭০ হেক্টর মৌসুমী সবজি ক্ষতি হয়েছে।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ. রশিদ বলেন, বৃষ্টিতে বরগুনায় কৃষি সেক্টরের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা বেশকিছু সেক্টরের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করেছি। আর্থিক ক্ষতিসহ পূর্ণাঙ্গ ক্ষতি নিরূপণে ২-৩ দিন সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব বলেন, ভারী বর্ষণে বরগুনার ছয়টি উপজেলায় প্রাথমিকভাবে ৫৮১টি পুকুর ও ১৫৩টি মৎস্য ঘের বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে। তবে এখনো ৬ উপজেলার সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। যে হারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে তাতে এ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে মৎস্য খাতে সাড়ে ৪ কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হতে পারে।জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, টানা বর্ষণে বরগুনায় মৎস্য কৃষিখাতে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের তাদের স্ব-স্ব এলাকার খোঁজ রাখার জন্য বলেছি। অতিবর্ষণের কারণে সৃষ্ট প্লাবনের শিকার বাসিন্দাদের সরকারের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তালিকা নির্ণয় করে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাসম্ভব সহায়তার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।এদিকে সাগরে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওযায় সাগরে গিয়ে উত্তাল সাগর আর ঝড়ের কবলে পড়ে শত শত মাছ ধরার ট্রলার সুন্দরবন সংলগ্ন, কচিখালী, কটকায় আশ্রয় নিয়েছে।