এদিন সাবধানী শুরু করে বাংলাদেশ। দশম ওভার পর্যন্ত দেখেশুনে খেলে। তবে সেই ওভারে লুক জঙ্গের করা তৃতীয় বলে কাট করতে গেলে সিকান্দার রাজার কাছে ক্যাচ দেন তামিম ইকবাল। ৩৪ বলে ২০ রান করেন টাইগার অধিনায়ক।
তামিম ইকবালের পর দ্রুত ফিরে যান লিটন দাশ। রিচার্ড এনগাভারার বলে তুলে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২১ রানে ব্র্যান্ড টেইলরকে ক্যাচ দেন। ৩৩ বলে ৪টি চারে নিজের ইনিংস সাজান তিনি। এরপর লুক জঙ্গের দ্বিতীয় শিকার হয়ে দ্রুত ফিরে যান মোহাম্মদ মিঠুন (২)। দলীয় ৫০ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
রান নেবেন কি নেবেন না, এই করতে করতেই উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাভার দারুণ এক থ্রোতে আউট হলেন মোসাদ্দেক হোসেন (৫)। এরইসঙ্গে দলীয় ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছে বাংলাদেশ।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৯তম হাফসেঞ্চুরি করেন সাকিব আল হাসান। তবে স্বস্তিতে ছিল না বাংলাদেশ। কেননা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ফিফটির আগেই ব্যক্তিগত ২৬ রানে ব্লেসিং মুজারবানির শিকার হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরপর ৬ রানে বিদায় নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ১৪৫ রানে বাংলাদেশ হারায় ৬ উইকেট।
দারুণ ব্যাটিং করা সাকিবকে ভালো সঙ্গ দিতে পারেননি আফিফ হোসেন। সিকান্দার রাজার বলে আউট হওয়ার আগে ১৫ রান করেন এই ব্যাটসম্যান।
তবে সাকিবের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে হারের শঙ্কা উড়িয়ে দেন সাইফ। জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন তারা।
টস জিতে এর আগে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামার সিদ্ধান্ত নেয় জিম্বাবুয়ে। প্রথমে ব্যাট করা জিম্বাবুয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান করে।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাংলাদেশ দলকে সাফল্য এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ডানহাতি পেসারের শর্ট লেন্থের বল অফ স্ট্যাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথে লাট করেছিলেন স্বাগতিক দলের ওপেনার তিনাশে কামুনহুকামুই। মাত্র ৩ রানেই প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
জিম্বাবুয়ে ইনিংসে দ্বিতীয় আঘাত করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশি স্পিনারের করা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে আগেই ব্যাট চালিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন স্বাগতিক দলের ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানি।
রেগিস চাকাভাকে সরাসরি বোল্ড করে ফেরান সাকিব আল হাসান। ইনিংসের ১৬তম ওভারে ও দলীয় ৮০ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২৬ রানে থাকা চাকাভা মাঠ ছাড়েন।
২৫তম ওভারে শরিফুল ইসলামের করা দ্বিতীয় বলে ব্যাট দিয়ে ওপরের দিকে খোঁচা দিতে চেয়েছিলেন ব্র্যান্ড টেইলর। তবে লাগেনি। কিন্তু জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক আনমনে ব্যাট সরাতে কখন যে স্টাম্পে আঘাত করে ফেলেছেন নিজেও জানেন না। তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নিয়ে আউট দেওয়া হয় তাকে। স্বাগতিকরা হারায় চতুর্থ উইকেট।
ধৈর্য হারিয়ে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ক্যাচে পরিণত হন ডিয়ন মায়ার্স (৩৪)। বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ের পঞ্চম ও নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নিলেন সাকিব আল হাসান।
জিম্বাবুয়ের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করা ওয়েসলি মাধেভেরেকে তামিম ইকবালের ক্যাচে ফেরান শরিফুল ইসলাম। ৬৩ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান মাধেভেরে। পরে ৪৪ বলে ৩০ রান করা সিকান্দার রাজাকে ফেরান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
টাইগার বোলারদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট পান শরিফুল ইসলাম। সাকিব দখল করেন ২টি উইকেট। এছাড়া তাসকিন, সাইফ ও মিরাজ একটি করে উইকেট লাভ করেন।
আগের ম্যাচের একাদশ নিয়েই মাঠে নামছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ, প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে চোট পাওয়া পেসার মোস্তাফিজুর রহমান এই মাচেও অনুপস্থিত। অন্যদিকে ইনজুরির কারণে জিম্বাবুয়ের একাদশ থেকে ছিটকে গেছেন টিমিসেন মারুমা ও রায়ান বার্ল। তাদের জায়গায় দলে ঢুকেছেন সিকান্দার রাজা ও তিনাশে কামুনহুকামুই।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মেহিদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম।
জিম্বাবুয়ে একাদশ: ওয়েসলি মাধেভেরে, তাদিওয়ানাশে মারুমানি, ব্র্যান্ডন টেইলর (অধিনায়ক), ডিয়ন মায়ার্স, রেগিস চাকাভা, লুক জঙওয়ে, টেন্ডাই চাতারা, ব্লেসি মুজারাবানি, রিচার্ড এনগাভারা, তিনাশে কামুনহুকামুই।