অর্থের বিনিময়ে নিরাপরাধীকে জেল খাটানো দুর্ভাগ্যজনক

অর্থের বিনিময়ে নিরাপরাধীকে জেল খাটানো দুর্ভাগ্যজনক
নিজস্ব প্রতিবেদক : অর্থের বিনিময়ে প্রকৃত অপরাধী বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে নিজেকে বাঁচিয়ে অন্য নিরাপরাধ লোককে জেলের মধ্যে আটক রাখে, যা দুর্ভাগ্যজনক।চট্টগ্রামে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তারের হয়ে জেল খাটা মিনুর বিষয়ে শুনানিতে রোববার (৬ জুন) এমন মন্তব্য করেছেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ।আদালতে মিনুর পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।শুনানিতে শিশির মনির কীভাবে মিনু অন্যের হয়ে জেল খেটেছেন তা আদালতের কাছে তুলে ধরেন। শিশির মনির বলেন, বিগত দুই বছরে আমাদের দেশে এমন ২৬টি ঘটনা ঘটেছে। একজনের নামে আরেকজন জেলে থাকে।তিনি বলেন, আসল আসামি শনাক্তে অনেক পদ্ধতি আছে। আইবলিং পদ্ধতি আছে এতে শনাক্ত করলে কোনো ভুল হবে না। এ বিষয়ে আমি আরও লিখিতভাবে আদালতকে জানাবো। তবে মিনুর ঘটনার পেছনে একটি চক্র কাজ করছে।  তাই পুরো ঘটনার বিচার বিচারিক অনুসন্ধানের আর্জি জানান তিনি।এসময় আদালত বলেন ‘আমরা মনে করি এভাবে যদি রিয়েল (মূল) কালপ্রিট (অপরাধী) অর্থের বিনিময়ে হোক অথবা বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে নিজেকে বাঁচিয়ে অন্য নিরপরাধ লোককে জেলের মধ্যে আটক রাখে, সেটা দুর্ভাগ্যজনক।রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ড. বশির উল্লাহ বলেন, আমরাও এটা চাই দোষীদের শাস্তি হোক, নিরাপদ কেউ যাতে জেলে না থাকে। এই সরকার কখনো এটা চায় না। আমরা আইনজীবী শিশির মনিরের সঙ্গে একমত। প্রয়োজনে এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করবেন।এরপর আদালত সোমবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।এর আগে ৩১ মার্চ এ ঘটনা উচ্চ আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।এরপর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আইনজীবীকে এফিডেভিট দাখিল করতে নির্দেশ দেন। এর মধ্যে ওই বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন হওয়ায় বিষয়টি বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আসে।গত ২৪ মার্চ মিনুর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক শরীফুল আলম ভূঁঞা উপ নথি পাঠিয়েছেন।একটি হত্যা মামলায় আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেন কুলসুম আক্তার কুলসুমীকে। আর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জেল খাটছেন মিনু। বিষয়টি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান আদালতের নজরে আনেন।গত ২২ মার্চ সকালে অতিরিক্ত চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালতে পিডব্লিউ মূলে মিনুকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে জবানবন্দি শুনে এ মামলার আপিল উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় মিনুর উপ-নথি ২৩ মার্চ হাইকোর্টে পাঠানোর আদেশ দেন।ওইদিন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউট (পিপি) মো. নোমান চৌধুরী  বলেন, আদালতে সংরক্ষতি ছবি সম্বলিত নথিপত্র দেখে কুলসুম আক্তার কুলসুমী আর মিনু এক নয় বলে নিশ্চিত হয়েছেন আদালত। যেহেতু ইতোমধ্যে এ মামলার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়েছে তাই মামলার উপ-নথি দ্রুত সময়ের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠানো হচ্ছে।এ মামলায় মিনুর পক্ষে শুনানি করেছেন আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

সারা দেশে ‘হিট স্ট্রোকে’ ৮ জনের মৃত্যু

কারাগারেও মাদকের আখড়া