শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য আসছে বিশেষ অ্যাপস

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য আসছে বিশেষ অ্যাপস

সমাচার রিপোর্ট : পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার জন্য বিশেষ অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপস) তৈরি করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) উদ্যোগে এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় এই অ্যাপস তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ইউজিসি সূত্র জানায়, সামনের দিনগুলোতে করোনার যে টিকা আসবে সেখান থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আবাসিক শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন। সব শিক্ষার্থীকে করোনার টিকার আওতায় এনেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে।
গত বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শেষ করেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। তিনি জানান, চল্লিশোর্ধ্ব শিক্ষকদের প্রায় সবাই টিকা নিয়েছেন। এখনও যারা নিতে পারেননি তাদেরও দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকাদান নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
সারাদেশে ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ। তাদের মধ্যে ১২০টি আবাসিক হলে এক লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে অবস্থান করেন দুই লাখের বেশি। আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে তারা টিকা পাবেন। সর্বশেষ তথ্যমতে, ৯১ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। তাদের পুরো তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দিয়েছে ইউজিসি। সব মিলিয়ে এক লাখ তিন হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীর তথ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছে। তাদের সবাইকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে টিকার আওতায় আনার প্রক্রিয়া জোরেশোরে শুরু হয়েছে। এ জন্যই বিশেষ অ্যাপস বানানো হচ্ছে।
জানা গেছে, এ অ্যাপসের মাধ্যমে শুধু ৪০ বছর বয়সের নিচের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিবন্ধন করে টিকা নিতে পারবেন। যাদের বয়স ৪০ এর বেশি, তারা এ অ্যাপসের আওতায় আসবেন না। তাদের অন্য প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন করে টিকা নিতে হবে।
ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে দুটি তালিকা দিয়েছেন। প্রথম তালিকায় জাতীয় পরিচয়পত্রধারী ৯১ হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে ১২ হাজার শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। দ্বিতীয় তালিকায় আছে বিশ্ববিদ্যালয়ে
পড়ূয়া সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থী। সরকার যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবে, সেভাবেই তাদের টিকা দেওয়ার সব প্রস্তুতি ইউজিসির আছে।
ড. ফেরদৌস জানান, শিক্ষার্থীরা যাতে দ্রুত ও ঝামেলা ছাড়াই টিকা পান সেজন্য তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় এ বিশেষ অ্যাপস তৈরি করা হচ্ছে। এ অ্যাপসে যাদের তথ্য ইনপুট দিয়ে রাখা হবে, সেই শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা নিবন্ধন করতে পারবেন।
পরে সরকার শিক্ষার্থীর টিকা
দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে মোবাইলে এসএমএস যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, তাদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের তথ্য নেওয়া হয়েছে। সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তারা চান শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে।
ইউজিসি সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নানা জটিলতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৩০ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা যায়নি। এ জটিলতা নিরসন করতেই মূলত এবার শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা বিশেষ অ্যাপস চালু করা হচ্ছে। যেসব শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ হয়নি বা জাতীয় পরিচয়পত্র পায়নি তারা জন্মনিবন্ধন দিয়ে এ অ্যাপসের টিকা নিতে পারবেন।
তবে শুধু আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পর তো কেবল আবাসিক শিক্ষার্থীরা ক্লাস করবেন না, অনাবাসিক শিক্ষার্থীরাও ক্লাসে ও ক্যাম্পাসে আসবেন। এতে কেউই নিরাপদ থাকবেন না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্রী তাবাসসুম রুবাইয়াৎ বলেন, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার উদ্যোগ কেন নেওয়া হচ্ছে না? তাদের বয়সও তো ৪০ বছরের নিচে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় তো তাদের টিকা নেওয়ার সুযোগ নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাদের টিকা দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

সারা দেশে ‘হিট স্ট্রোকে’ ৮ জনের মৃত্যু

কারাগারেও মাদকের আখড়া