রাজশাহী প্রতিনিধি : দাফনের জন্য সব প্রস্তুতি শেষ। জানাজার জন্য লোকজনও সমবেত হয়েছেন।কিন্তু শেষপর্যন্ত সব আয়োজন ভেস্তে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাফনের কাপড়ে মোড়ানো সাত বছরের শিশু মারুফ হাসানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে।শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।মারুফ হাসান বাগমারা উপজেলার বিনোদপুর গ্রামের শাহাজাহান আলীর দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে। শিশুর মায়ের অভিযোগ, বাবা ও সৎমা তার ছেলেকে হত্যা করেছে। তবে অভিযুক্তদের দাবি শিশুটিকে জ্বীনে মেরে ফেলেছে।পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে শিশু মারুফ হাসানকে বাড়িতে সৎমায়ের কাছে রেখে শাহাজাহান আলী কাজের জন্য বাইরে যান। শিশুটি অস্বাভাবিক আচরণ করছে বলে সৎমা মুক্তা বেগম মোবাইলে তার স্বামীকে জানান। স্বামীর পরামর্শে স্থানীয় কবিরাজের কাছ থেকে ঝাড়-ফুঁক দেওয়া পানি শিশুর নাকে মুখে পানি ছিটিয়ে দেওয়া হয়।এতে কোনো উন্নতি হয়নি। একপর্যায়ে শিশুটি অচেতন হয়ে পড়ে। এ সময় চাচা ও প্রতিবেশিরাও ছুটে এসে শিশুর জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষপর্যন্ত সম্ভব হয়নি। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শিশুটি মারা যায়।পরে সকাল সাড়ে ১০টায় মরদেহ দাফনের আয়োজন করা হয়। এ জন্য কাফনের কাপড়ে মোড়ানেসহ সব প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। অনেক স্বজনও বাড়িতে আসেন মরদেহ দাফনের জন্য। দাফনের ঠিক আগ মুহূর্তে ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে মা মারুফা বেগমও স্বামীর বাড়ি থেকে ছুটে আসেন।এ সময় ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ অভিযোগের পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুর মরদেহ কাফন থেকে খুলে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠায়।রাজশাহীর বাগমারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। এখনও মামলা হয়নি। তবে শিশুর শরীরে আঘাতের চিহ্ন বা হত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। যাদের থানায় আনা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।