নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়া পুনর্গঠন করা হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কাজ করছে।আমরা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্বকারী পুলিশ চাই।মঙ্গলবার (৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশে (পিএসসি) মাস্টার্স ইন অ্যাপ্লাইড ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ ম্যানেজমেন্ট (এমএসিপিএম) ডিগ্রির সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।পুলিশের পেশাকে একটি ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস হিসেবে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, সভ্য সমাজে পুলিশ ছাড়া কোনো দেশ কল্পনা করা যায় না। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত ১২ বছরে পুলিশের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে সমুন্নত একটি সুসংহত পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে চাই। এজন্য আমরা প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি।প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়ন ও প্রশিক্ষণ কাঠামো করা হয়েছে। যুগোপযোগী করা হয়েছে বেসিক ট্রেনিং পাঠ্যক্রম। প্রতিটি স্তরে প্রত্যেক পুলিশ অফিসার ও ফোর্সের জন্য প্রতিবছর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশের জনগণ আগামী দুই বছরের মধ্যে এর সুফল পাবেন।এসময় আইজিপি বলেন, আমরা (পুলিশ) দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ‘লিডিং ফোর্স’ হতে চাই।‘পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ’ কে পুলিশের ‘থিংক ট্যাংক’ অভিহিত করে আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, পেশাগত দক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পিএসসি অনন্য সাধারণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এ প্রতিষ্ঠানের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) রয়েছে। ভবিষ্যতে এর আওতা আরও বাড়বে।অনুষ্ঠানে ডিগ্রিপ্রাপ্ত গ্রাজ্যুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে আইজিপি বলেন, পেশাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় লব্ধ জ্ঞান কাজে লাগাতে হবে।অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, সবার জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে পুলিশ অনন্য অবদান রেখেছে, যা জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।তিনি বলেন, পুলিশের পেশাগত দায়িত্বের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রেখে কোর্সটি সাজানো হয়েছে, যার ফলে তাদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধিত হবে।সভাপতির বক্তৃতায় রেক্টর ডিগ্রি অর্জনকারী গ্রাজ্যুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, ডিগ্রি অর্জনের ফলে আপনাদের দক্ষতা বেড়েছে। অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে হবে। দায়িত্ব পালনকালে স্থাপন করতে হবে সততা ও দক্ষতার অনন্য নজির।পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ’র রেক্টর ড. মোহাম্মদ নাজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি (এঅ্যান্ডও) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজি (এসবি) মীর শহীদুল ইসলাম, এপিবিএন’র অতিরিক্ত আইজি মোশারফ হোসেন, টিঅ্যান্ডআইএম’র অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ ইব্রাহিম ফাতেমী, অতিরিক্ত আইজি (অর্থ) এস এম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) মো. মাজহারুল ইসলাম, এটিইউ’র অতিরিক্ত আইজি মো. কামরুল আহসান, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা, পিএসসির ফ্যাকাল্টি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যাচের মোট ৫৭ জন গ্রাজ্যুয়েটকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম ব্যাচে ১৪ জন, দ্বিতীয় ব্যাচে ১৯ জন এবং তৃতীয় ব্যাচে ২৪ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ পুলিশের ৩১ জন, সশস্ত্র বাহিনীর ৬ জন, আইনজীবী ৩ জন, করপোরেট সার্ভিস ৭ জন, শিক্ষক ৩ জন, চিকিৎসক ১ জন, সাংবাদিক ১ জন এবং অন্য সরকারি চাকরিজীবী ৫ জন রয়েছেন।তিনটি ব্যাচে ডিগ্রি অর্জনকারী ৫৭ জনের মধ্যে সর্বোচ্চ ফলাফল লাভ করেছেন গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা।২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাপেক্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ থেকে মাস্টার্স ইন অ্যাপ্লাইড ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে।