নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় সামিউল আলিম চৌধুরী (৪৫) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে আসায় ভুক্তভোগী তিনজনকে মামলার আসামি করা হয়েছে। এমনটাই দাবি সোহেল রানা পলাশ (৩২), তরিকুল ইসলাম মামুন (২৭) ও মীর হোসেন (৩২) এর পরিবারের।ভুক্তভোগী সোহেলের ছোট বোন তানজিলা আক্তার সিমা বাংলানিউজের বলেন, বুধবার (৩ মার্চ) রাত সাড়ে নয়টায় মোহাম্মদপুর থানার জহুরী মহল্লা চাঁদের হাট মাঠের সামনে দিয়ে আমার বাসায় আসার সময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সমিউল আলীম চৌধুরী, ইমন চৌধুরী, মকবুল চৌধুরী, আরিফ চৌধুরী, ইকরাম চৌধুরী, সবুজ চৌধুরী, তাজুল ইসলাম তাজু, সজলসহ আরো ১০ জন মিলে মোটরসাইকেল আরোহী আমার ভাই, তার শ্যালক ও বন্ধুদের থামায়। তারা দলবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্রসহ আমার ভাই সোহেলের ওপর হামলা করে। তাকে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। সামিউল, ইমন ও ইকরাম লোহার রড ও কাঠের লাঠি দিয়ে আমার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারতে থাকে। তাদের আঘাতে আমার ভাইয়ের নাকের মাঝখানের হাড় ভেঙে ও ফেটে যায়। এছাড়াও ডান গাল, ডান পায়ের হাঁটুতে, বাম কানে রক্ত জমাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে জখম হয়ে যায়। আমার ভাইয়ের শ্যালক ও বন্ধু বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা মারা শুরু করে।সিমা আরো বলেন, এই অবস্থায় তাদের চিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে আসে। সেসময় আমার ভাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে তারা সবাই পালিয়ে যায়। আমি ঘটনার কথা শুনতে পেয়ে মাকে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। তাদের তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যাই। ওই রাতে আমি মোহাম্মদপুর থানায় অভিযোগ করতে যাই। কিন্তু অভিযোগটি এখন পর্যন্ত থানায় গ্রহণ করেনি। ভুক্তভোগী মীরের দুলাভাই এস এম জহির বলেন, ওই (৩ মার্চ) দিনের ঘটনায় তিনজনের ওপর আক্রমণ করা হয়। মোহাম্মদপুর বিজলী মহল্লার একটি ক্লাবকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের শত্রুতার জের থেকেই এই হামলা হয়েছে। মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সামিউল আলিম চৌধুরীর নির্দেশে তার বাহিনীর সদস্যরা হামলা চালায়। এই ঘটনায় বুধবার রাতে থানায় অভিযোগ করতে গেলে সেই অভিযোগ এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। মোহাম্মদপুর থানার কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার শ্যালকসহ তিনজনকে চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারির একটি পুরনো মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি বলেন, শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকায় বুধবার রাত সাড়ে তিনটায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাকিব উন্নত চিকিৎসার কথা বলে তাদেরকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে থানা থেকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। অসুস্থ থাকায় আদালত তাদেরকে সতর্কতার সহিত দুইদিনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় পাঠান। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। কেউ হয়রানি হোক আমি এটা চাই না। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো, যদি তারা ইনোসেন্ট হয় তাহলে তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, এই মামলায় কারো প্রভাব নেই। কারো প্রভাবে আমি কাজ করি না। আমি কোনো দুর্নীতি করি না, কারও প্রভাবে কাজও করি না।