দেশের ১৩ শতাংশ হাসপাতাল-ক্লিনিকে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই

ম সমাচার রিপোর্ট
দেশে স্বাস্থ্য সেবাখাতে গড়ে প্রতি পাঁচটি হাসপাতাল বেডের জন্য একটি টয়লেট সুবিধা আছে। ১২ শতাংশ স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকদের জন্য আলাদা টয়লেট নেই। আর ১৩ শতাংশে নার্স ও চিকিৎসকদের জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ইউনিসেফ এবং ওয়াটার এইডের যৌথ জরিপে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ২০১৮ সালের এই জরিপের প্রাথমিক ফলাফল আগে প্রকাশ হলেও পূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়। জরিপের তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিচালক মো. মাসুদ আলম। জরিপের তথ্যে আরও বলা হয়, ৭৭ শতাংশ স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের কার্যকর পানির উৎস আছে। ৭৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য উন্নতমানের পানির উৎস আছে। ৮৬ শতাংশ ক্ষেত্রেই চিকিৎসকদের জন্য পানির ব্যবস্থা আছে, ৮২ শতাংশে সাবান কিংবা গুড়া সাবানের ব্যবস্থা আছে। ৮৯ শতাংশ জায়গায় নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য পানি আছে, ৭৭ শতাংশে সাবান কিংবা গুড়া সাবানের ব্যবস্থা আছে।
জরিপের তথ্য বলছে, ৩৭ শতাংশ রেস্তোরাঁয় ও ৩৪ শতাংশ পথের খাবারের ক্ষেত্রে খাওয়ার পানি হিসেবে শ্যালো টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া ২৯ শতাংশ উভয়ক্ষেত্রেই গভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করে। রান্নার ক্ষেত্রে ৩৯ শতাংশ রেস্তোরাঁয় ও ৩৭ শতাংশ পথের খাবারে শ্যালো টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করা হয়। আর ৩২ শতাংশ পথের খাবারে ও ২৭ শতাংশ রেস্তোরাঁয় গভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করা হয়।
মেয়েদের পিরিয়ডের সময় স্কুলে থাকা অবস্থায় পুরনো কাপড় ব্যবহার করে ৩৪ শতাংশ এবং স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করে ৬২ শতাংশ মেয়ে। আর বাসায় পুরনো কাপড়ের ব্যবহার হয় ৩৯ শতাংশ ক্ষেত্রে এবং ৫৬ শতাংশই স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করে। এর মধ্যে ৭৯ শতাংশই পুরনো কাপড় ধুয়ে একাধিকবার ব্যবহার করে।
মো. মাসুদ আলম জানান, ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮-এর প্রতিবেদনে পাঁচটি পৃথক ক্ষেত্র থেকে সংগৃহীত তথ্য হতে প্রাপ্ত ফলাফল উপস্থাপিত হয়েছে। এই ক্ষেত্রগুলো হলো -গৃহস্থালি, বিদ্যালয়, স্বাস্থ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান,রেস্তোরাঁ এবং ফুটপাতের খাদ্য বিক্রেতা। এই ক্ষেত্রসমূহে এসডিজির স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সূচক, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, ভিশন ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১ ইত্যাদির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব জনাব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, প্রমাণ ভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ ও কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নে এ জরিপের ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন হচ্ছে তা তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষত কোভিড -১৯ এর উদ্ভূত পরিস্থিতির আলোকে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি (হাইজিন) মেনে চলার প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে হবে। ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮ একটি গুরুত্বপূর্ণ জরিপ, যা আমাদের ঘাটতিগুলোকে চিহ্নিত করে, অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জগুলো সামনে নিয়ে আসে এবং দেশব্যাপী স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ ছাড়া অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফের ওয়াশ বিশেষজ্ঞ মনিরুল ইসলাম।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

জ্বালাও-পোড়াও করে সরকার পরিবর্তন করতে পারবে না বিএনপি: সালমান এফ রহমান

বাকেরগঞ্জে জাতীয় যুব দিবস পালিত