আওয়ামী লীগের ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’, বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি

আওয়ামী লীগের ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’, বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ ৩০ ডিসেম্বর। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই বছরপূর্তি। ২০১৮ সালের এই দিনে দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশভাবে জয় পায় এবং টানা তৃতীয়বারের মত পাঁচ বছরের জন্য সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি চতুর্থবারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন এবং ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট মন্ত্রী সভা গঠন করেন। এর আগে ২০১৮ সালের ৮ নেভেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষণায় ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হলেও ১২ নভেম্বর পুনঃতফসিলে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতৃত্বে গঠিত মহাজোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোটসহ বাংলাদেশের নিবন্ধিত সর্বমোট ৩৯টি দল অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনে ১ হাজার ৮৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন যার মধ্যে ১২৮ জন স্বতন্ত্র। এ ছাড়া গাইবান্ধা-৩ আসনে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বি চৌধুরী ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে নির্বাচনের প্রাক্কালে মৃত্যুবরণ করায় নির্বাচন কমিশন আসনটিতে ভোটগ্রহণ স্থগিত করে। ২০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি এ আসনে ভোট গ্রহণের পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে সারাদেশে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন। যার মধ্যে ৫ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩২৯ জন পুরুষ ও ৫ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ১৫১ জন নারী ভোটার। বাংলাদেশে প্রথমবারের মত এ নির্বাচনের ৬টি নির্বাচনী আসনে সম্পূর্ণভাবে ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোট গ্রহণ করা হয়। ইভিএম ব্যবহার করা আসনগুলো ছিল, ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, রংপুর-৩, খুলনা-২ ও সাতক্ষীরা-২।
গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উদযাপন করবে আওয়ামী লীগ
৩০ ডিসেম্বর দেশব্যাপী ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উদযাপন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল মঙ্গলবার জানানো হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ইতিহাসে একটি বিজয়ের মাইলফলক। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তি, দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের আস্ফালন আর সহিংস রাজনীতির অন্ধকার ছায়া কাটিয়ে গণতন্ত্রের নবতর অভিযাত্রায় অগ্রসর হয় বাংলাদেশ। এ কারণে ৩০ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জেলা, মহানগর, উপজেলা ও থানা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সকাল ১১টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। বিকেল ৩টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ এমপি, ডা. দীপু মনি এমপি ও ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপি
৩০ ডিসেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে ‘ভোট ডাকাতি’ হয়েছে উল্লেখ করে ৩০ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে একাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিল ও পুনঃনির্বাচনের দাবিও জানান এই বিএনপি নেতা। রিজভী বলেন, ৩০ ডিসেম্বর বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১১টায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে দলের জাতীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। একই দিন দেশব্যাপী জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচী পালনে দেশবাসীসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে রাজধানীসহ জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানান রিজভী।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

বাকেরগঞ্জে বিদ্যুৎ স্পর্শ হয়ে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু

মাদারীপুরে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্ত অংশীজনের (Stakeholders) অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভা