নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রকে বিপন্ন করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এরা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। মানুষ আজ মতপ্রকাশ করতে পারে না। এ ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে জাতিকে উদ্ধার করতে হবে। গতকাল রোববার দুপুর পৌনে ২টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ স্বীকার ও রক্ত দিতে হয়। যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়ে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে, এ আওয়ামী লীগ সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এ যে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই, এ লড়াই শুধু আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নয়, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আপনারা হতাশ হবেন না। হটকারিও হওয়া যাবে না। ফ্যাসিবাদ হঠানোর আন্দোলন দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এ পথ অনেক দীর্ঘ। এখানে ধৈর্যহারা হওয়া যাবে না। তিনি বলেন, আজকের গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় আপসহীন নেতা খালেদা জিয়া। যিনি জীবনভর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে আসছেন। ১৯৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন যে ফ্যাসিবাদ হঠানোর আন্দোলন, সবক্ষেত্রেই আপসহীন তিনি। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করা সাধারণ কথা নয়। খালেদা জিয়া সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ গোটা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে হাহাকার। তাদের মধ্যে কষ্ট-বেদনা। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যেখানে কথা বলতে পারবো। কিন্তু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কিছুই এখানে নেই। কুষ্টিয়ার ঘটনা সরকারের গভীর নীল নকশার চক্রান্ত উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানো। ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে তারা সব অপকর্ম করছে। কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের পর বিএনপির এক নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়েছে। এসব গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি বলেন, একজন ছাত্রলীগ নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেন। গাড়ি চালক কয়েক কোটি টাকা পাচার করেন। একজন ব্যক্তি কানাডায় আড়াই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। এরা সবাই আওয়ামী লীগের লোকজন। কিছু দিন আগে একটা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, কানাডায় বেগম পাড়ায় অনেকে টাকা পাচার করেছে। তাদের তালিকা প্রকাশ করেন না কেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেগম পাড়ার নাম প্রকাশ করুন। জাঁতি সেটা জানতে চায়, কারা টাকা পাচার করে। তিনি বলেন, যারা জনগণের শাসনে তথা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তারা আজ সব জায়গায় নির্যাতিত, নিপীড়িত। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর যেসব দেশে স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন, তারাই আজ নিপীড়িত। ভারতের দিকে তাকান, আমেরিকার দিকে তাকান, যেখানে গণতন্ত্রের সূতিকাগার, সেখানেও গণতন্ত্র নিপীড়ত। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, অন্যকে হত্যা করার স্বাধীনতা, কথা বলতে না দেওয়ার স্বাধীনতা, এটাই আজ গণতন্ত্র। আমেরিকার সংস্থাও বলেছে, বাংলাদেশে বহু মানুষকে বিচার বহির্ভূত হত্যা করা হয়েছে। এটাই আজকের গণতন্ত্রের নমুনা। ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানুল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।