নিজস্ব প্রতিবেদক : পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জরুরি অবস্থায় প্রস্তুতি ও সাড়াদানের জন্য একটি গাইডলাইন অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রণীত ‘জাতীয় পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয়তা বিষয়ক জরুরি অবস্থায় প্রস্তুতি ও সাড়াদান পরিকল্পনা’এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয় থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, রূপপুর পাওয়ার প্ল্যান্টের সেফটি মেজারের জন্য এ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক এটমিক এনার্জি কমিশনের রিকয়ারমেন্ট আছে যে, এ ধরনের পাওয়ার প্ল্যান্ট করার আগে সেফটি গাইডলাইন ও রেসপন্স প্ল্যান থাকতে হবে। না হলে তারা চালু করার সুযোগ দেবে না। সেজন্য আইএইএ’র গাইডাইন-স্ট্রাকচার অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় দেশের সব দুযোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে ‘জাতীয় পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয়তা বিষয়ক জরুরি অবস্থায় প্রস্তুতি ও সাড়াদান পরিকল্পনা’ বাংলাদেশের দুযোগ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পরিকল্পনার সঙ্গে সংযুক্ত এবং সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে। এ পরিকল্পনার দু’টি উল্লেখযোগ্য দিক নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রস্তাবিত দলিলে পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয়া বিষয়ক জরুরি অবস্থার ধরন, মানে কী ধরনের দুযোগ হতে পারে তা আমাদের আসলে সে আইডিয়া নেই। এ গাইডলাইন আমাদের সে আইডিয়া দেবে। ব্যবস্থাপনাটা কীভাবে করা হবে, রেসপন্স কীভাবে… আল্লাহ না করুক যদি কখনও কোথাও কোনো ডিজ্যাস্টার হয়, পৃথিবীতে এ পর্যন্ত প্রায় আটটটি ডিজ্যাস্টার হয়েছে। চারটা আমেরিকায়, একটা সোভিয়েত ইউনিয়নে, গ্রেট ব্রিটেনে এবং জাপানে সুনামির সময়। এগুলোর এক্সপেরিয়েন্সকে তারা কাউন্ট করেছে এবং আমাদের জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে কাঠামো দাঁড় করানো যে কখনও কিছু হলে কীভাবে ফেইস করতে হবে। এজন্য আর্মড ফোর্সসহ পর্যাপ্ত জনবল যারা আছে তাদেরকে প্রস্তুতি এবং ট্রেনইআপ করা হবে। তিনি বলেন, এটা মূলত বাংলাদেশে পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয় জনিত দুযোগ মোকাবেলার জন্য যথাযথভাবে একটা ব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হবে। আল্লাহ না করুক, ডিজ্যাস্টার হোক বা না হোক সেই ডিজ্যাস্টারের জন্য আগে থেকে প্রস্তুতির জন্য একটা গাইডলাইন। ডিজ্যাস্টার নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। রূপপুর প্রকল্পের নকশা ও নির্মাণ কাজ রাশিয়ান পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন হচ্ছে। নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমস্ত যন্ত্রপাতি রাশিয়ায় তৈরি হচ্ছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) নিজস্ব মেশিন উৎপাদনকারী কারখানাগুলো এ যন্ত্রপাতি তৈরি করছে। পারমাণিবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ইউনিটের প্রত্যেকটির উৎপাদন ক্ষমতা ১২শ মেগাওয়াট, অর্থাৎ এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট উৎপাদন হবে ২৪শ মেগাওয়াট।