ড. কামালের শোকজ সুব্রত-মন্টু-সাইয়িদ-আফ্রিককে

ড. কামালের শোকজ সুব্রত-মন্টু-সাইয়িদ-আফ্রিককে

ঢাকা: দলীয় গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী কর্মকাণ্ড করায় গণফোরামের সাবেক নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ও সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

জানা গেছে, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া গত ২৮ সেপ্টেম্বর এই চারজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

দলীয় গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড কেন পরিচালনা করছেন এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে তাদের চারজনকে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, সাত দিন সময় অতিবাহিত হলেও আরও ২/১ দিন সময় দেওয়া হবে। এরপরও সন্তোষজনক জবাব না দিলে তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, “সুব্রত, মন্টু, আবু সাইয়িদ ও আফ্রিক দলে বিতর্কের মধ্যে আছেন। তাদেরকে লিখিতভাবে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। দেখা যাক তারা কী করেন। তাদের সাত দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। তারপর আমাদের সিদ্ধান্ত দেব। তবে কী করবো সেটা এখন বলবো না। সন্তোষজনক উত্তর না পেলে নিশ্চয়ই অ্যাকশন নেওয়া হবে। ”

তিনি বলেন, “শুক্রবার (২ অক্টোবর) ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে আমাদের একটি বৈঠক হয়েছে। আমরা আগামী ১৭ অক্টোরের পর বিভিন্ন জেলা সফর করবো। এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ”

‘ড. কামাল হোসেন কাউন্সিলে না এলে নতুন সভাপতি বানানো হবে’, মোস্তফা মহসিন মন্টুর এই বক্তব্যে ড. কামাল হোসেনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রেজা কিবরিয়া বলেন, “তাদের বক্তব্যে স্যার (ড. কামাল) দুঃখ পেয়েছেন। তবে উনি ক্ষোভ প্রকাশ করেননি। ৬৮/৬৯ সাল থেকে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ে থেকে উনি অনেক কিছু দেখেছেন। এই ছোট একটি জিনিসে উনি রেগে যাবেন বা উত্তেজিত হবেন তা নয়। তবে উনি বলেছেন, তাদের কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য তিনি আশা করেননি।

এদিকে সোমবার (৫ অক্টোবর) গণফোরামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও প্রস্তুতি পরিষদের আহবায়ক মোস্তফা মহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ণ কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও নির্বাহী সভাপতি ও দলের মুখপাত্র সুব্রত চেীধুরী এক যৌথ বিবৃতিতে জানান স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তি করে বিতর্কিত আহবায়ক কমিটি গঠন করার কারো এখতিয়ার নেই। গণফোরামের গঠনতন্ত্রে কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটি গঠনের কোনো বিধান নেই। বর্ধিত সভায় গণফোরাম থেকে স্থায়ী বহিষ্কৃত কোনো ব্যক্তির নামে প্রচারিত এ আহবায়ক কমিটি কোনো রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া ও কোনো নেতা বা সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। এ ধরনের কার্যক্রম স্বেচ্ছাচারী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।

জানতে চাইলে দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু  বলেন, ড. রেজা কিবরিয়াসহ ৪ কুচক্রী গণফোরামকে গণতন্ত্রহীন ও স্বেচ্ছাচারী দলে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। এ চক্রটি ড. কামাল হোসেনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে দূরভিসন্ধি ও ড. কামাল হোসেনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। দেশে আজ যেখানে প্রয়োজন দলীয় ঐক্য মজবুত করা, খুন ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, দুর্নীতি ও দুবৃত্তায়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করা, সেখানে এই চক্রটি কোন উদ্দেশ্যে গঠনতন্ত্র বিরোধী অপপ্রচারে মেতে উঠেছে। আগামী কাউন্সিলে দলকে গণমুখী ও শক্তিশালী করে তার যথাযথ জবাব দেওয়া হবে।

আগামী ১৭ অক্টোবর শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের কর্মসূচি, একই দিনে ড. কামাল হোসেন ও রেজা কিবরিয়া অংশের কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির সভা ডাকায় কোনো বিশৃঙ্খলা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা মিটিং ডেকেছে এটা আমার জানা নেই। আর  গণফোরাম জন্মের পর এ পর্যন্ত কখনোই প্রেসক্লাবে কেন্দ্রীয় কমিটির সভা হয়নি। এটা তারা প্রচারের জন্য প্রেসক্লাব ভাড়া করেছেন। আমরা মানববন্ধনের ডাক দিয়েছি বাইরে।

চারজনকে কারণ দর্শাও নোটিশ দিয়েছে এ বিষয়ে মন্টু প্রথমে বলেন, আমি কোনো চিঠি পাইনি। পরে বলেন, সুব্রত চৌধুরী হয়তো পেয়েছেন। এ ধরনের শোকজ দেওয়ার এখতিয়ার তাদের নেই। গণফোরামের গঠনতন্ত্রে আহবায়ক কমিটির বিধান নেই। সে হিসেবে দলের বর্তমানে কোনো কমিটি নেই।

আপনাদের ডাকা কাউন্সিলে ড. কামাল হোসেন না এলে নতুন সভাপতি নির্বাচন করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেবে।

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

ছাত্রলীগ জোর করে বিশ্ববিদ্যালয় দখলের চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল

বিরোধীদলীয় নেতা-উপনেতাকে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ ও নববর্ষের শুভেচ্ছা