আনিসুল হকসহ প্রথম আলোর ৫ জনের মালামাল ক্রোকের নির্দেশ 

আনিসুল হকসহ প্রথম আলোর ৫ জনের মালামাল ক্রোকের নির্দেশ 

ঢাকা: প্রথম আলোর সাময়িকী ‘কিশোর আলোর’ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে ঢাকা রে‌সি‌ডে‌ন্সিয়াল ক‌লে‌জের ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাতের (১৫) মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া মামলায় কিশোর আলো সম্পাদক ও লেখক আনিসুল হকসহ পাঁচজনের মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।  

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এ আদেশ দেন। অন্য আসামিরা হলেন- কবীর বকুল, শুভাশীষ প্রামাণিক শুভ, মুহিতুল আলম পাভেল, ও শাহ পুরান তুষার। ক্রোকী পরোয়ানা তামিলের জন্য আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত।

এই মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক আসিফ  এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, এরপরও আসামিরা হাজির না হলে বা গ্রেফতার করা না গেলে তাদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। তাতেও কাজ না হলে তাদের পলাতক দেখিয়েই বিচার শুরু হবে।
গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। এরপর প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামি জামিন নেন।
এর আগে নাইমুল আবরার নিহত হওয়ায় কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল আলিম এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
প্রতিবেদনে ঘটনার জন্য মতিউর রহমান ও আনিসুল হক ছাড়াও কবীর বকুল, শুভাশীষ প্রামাণিক শুভ, মুহিতুল আলম পাভেল, শাহ পুরান তুষার, জসিম উদ্দিন তপু, মোশারফ হোসেন, মো. সুমন ও কামরুল হওলাদারকে ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়।
আইনজীবী ওমর ফারুক আসিফ বলেন, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছিল। একইসঙ্গে এ ঘটনায় আর কারা জড়িত এবং কার কী দায় রয়েছে তা তদন্ত করার জন্য আমরা আবেদন জানিয়েছিলাম। স্বল্প সময়ের মধ্যেই এ মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। যে ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছিল সেই ধারাতেই কিশোর আলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত ১০ জনকে এ ঘটনার জন্য দায়ী করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। আমরা এই প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট।
তিনি আরও বলেন, আজ আদালত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এই ধারায় বিচারে চূড়ান্তভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামিদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড হতে পারে।
গত বছর ১ ন‌ভেম্বর ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাইমুল আবরার রাহাত নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। ওইদিন বিকেলে বিদ্যুতায়িত হলে তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর গত বছর ৬ নভেম্বর নাইমুল আবরা‌রের বাবা ম‌জিবুর রহমান দৈ‌নিক প্রথম আলার সম্পাদক ও প্রকাশক এবং কি‌শোর আলোর প্রকাশক ম‌তিউর রহমা‌নের বিরু‌দ্ধে এই মামলা দায়ের করেন। তার বিরু‌দ্ধে দণ্ড‌বি‌ধির ৩০৪ (ক) ধারায় অব‌হেলাজ‌নিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়।
ওইদিন আদালত শিক্ষা‌র্থী নাইমুল আবরা‌রের মরদেহ দ্রুত কবর থে‌কে তু‌লে ময়নাতদ‌ন্তের নি‌র্দেশ দেন। একইস‌ঙ্গে এ ঘটনায় হওয়া অপমৃত্যুর মামলার স‌ঙ্গে নতুন মামলা একীভূত ক‌রে তদন্ত ক‌রে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা‌কে (ও‌সি) প্রতি‌বেদন দা‌খি‌লের নি‌র্দেশ দেন।  

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের ৮ মাস না পেরোতেই ভাঙন

সিন্ডিকেটের কারনে আলুর দামের উর্ধ্বগতি