পরিদর্শক লিয়াকতের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা

পরিদর্শক লিয়াকতের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা

চট্টগ্রাম: ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় ও পরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে টেকনাফে সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ সাত জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের একটি আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় আসামিদের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।

বুধবার (২৬ আগস্ট) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন এসএম জসিম উদ্দীন নামে এক ব্যবসায়ী।

মামলার এজাহারে জসিম উদ্দীন মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দিয়ে সেটি মামলা হিসেবে গ্রহণের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালত তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের তৎকালীন এসআই লিয়াকত আলী, কুমিল্লা দাউদকান্দি থানার তৎকালীন এসআই নজরুল ও এসআই হান্নান। অপর চার অভিযুক্ত হলেন- এস এম সাহাবুদ্দিন, বিষ্ণুপদ পালিত, কাজল কান্তি বৈদ্য ও জিয়াউর রহমান।

অভিযোগ থেকে বাদ দেওয়া হয় যাদের তারা হলেন, সিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন এসআই সন্তোষ কুমার, পতেঙ্গা থানার তৎকালীন এসআই কামরুল, সদরঘাট থানার তৎকালীন এসআই তালাত মাহমুদ, পতেঙ্গা থানার তৎকালীন ওসি প্রনব চৌধুরী, সদরঘাট থানার তৎকালীন ওসি মর্জিনা বেগম এবং গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বাবুল আক্তার।

বাদির আইনজীবী জুয়েল দাশ বলেন, এসএম জসিম উদ্দীনকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় ও পরে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে লিয়াকত আলীসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছিল। আদালত লিয়াকতসহ সাত জনের বিষয়ে তদন্ত করতে সিএমপি ডিসি ডিবিকে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে যাদের আপাতত তদন্তের বাইরে রাখা হয়েছে তদন্তে যদি তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তবে তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

অ্যাডভোকেট জুয়েল দাশ বলেন, সাগরিকা এলাকার একটি কারখানার মালিক এসএম জসিম উদ্দীন। ২০১৩ সালে তার কারখানায় চুরির ঘটনায় তিনি আদালতে একটি মামলা করেন। ওই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ডিবির তৎকালীন এস আই লিয়াকত আলী। ২০১৪ সালের ১৪ জুন তদন্ত কর্মকর্তা লিয়াকত আলী জসিম উদ্দীনকে তার অফিসে ডেকে নেন। এর আগেই মামলা সঠিকভাবে তদন্তের জন্য তার কাছ থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু পরবর্তীতে আবার জসিম উদ্দীনকে অফিসে ডেকে নিয়ে আসামিপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করার জন্য চাপ দেন।

তিনি বলেন, জসিম উদ্দীন রাজি না হয়ে যখন বেরিয়ে আসছিলেন, তখন কয়েকজন পুলিশ সদস্য মিলে তাকে আটক করে চোখ বেঁধে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। চোখ খোলার পর দেখেন তিনি পতেঙ্গা থানায় আছেন। সেখানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য মিলে তাকে মারধর করেন। পরে ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। আড়াই লাখ টাকা সংগ্রহ করে তাদের হাতে দেন জসিম উদ্দীন।

অ্যাডভোকেট জুয়েল দাশ বলেন, টাকা দেওয়ার পরও জসিম উদ্দীনকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার একটি ভুয়া পরোয়ানার মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রায় ছয় মাস জেল খেটে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন।

 

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

বেইলি রোডে আগুন: ভবনের ব্যবস্থাপকসহ চারজন রিমান্ডে

ঢাকা-৪ আসনের গেজেট প্রকাশ স্থগিত থাকবে: হাইকোর্ট