বরিশালের নদ-নদীতে জোয়ারের উচ্চতা

বরিশালের নদ-নদীতে জোয়ারের উচ্চতা

বরিশাল: বরিশালের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) বিকেল থেকে শুক্রবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যা ও শনিবার (২২ আগস্ট) সকালে জোয়ারের পানির উচ্চতা কিছুটা কমেছে।

এক্ষেত্রে নদীর অবস্থান ভেদে ৪ থেকে ২২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত জোয়ারের পানির উচ্চতা কমেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে জোয়ারে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ২১ সেন্টিমিটার, ভোলার দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৭৪ সেন্টিমিটার, ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৪৩ সেন্টিমিটার, ভোলার দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৯৪ সেন্টিমিটার, ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৫৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এ পানি আরও উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এদিন বিকেলে সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৫২ সেন্টিমিটার, ভোলার দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ১০৯ সেন্টিমিটার, ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৬৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডারদের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০ বছরের মধ্যে কীর্তনখোলা নদীর পানি বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ লেভেল অতিক্রম করে। ওইদিন কীর্তনখোলা নদীর পানির উচ্চতা ছিল তিন দশমিক সাত সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে কীর্তনখোলার নদীর পানি প্রবাহিত হয়েছে।

এদিকে পরিবেশ গবেষকরা বলছেন, দক্ষিণাঞ্চলে নদ-নদীর পরিমাণ এতটাই বেশি যে বিগত বছরগুলোতে কখনোই জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা যায়নি। কিন্তু এবারে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীতে জোয়ারের পানি এতটাই বেড়েছে যে অনেকস্থানে বেড়িবাঁধের উপর দিয়েও লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। বিগত সময়ে যেখানে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করতো। জলাবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমনটা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করেন তারা।

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় বরিশালে বাকেরগঞ্জের বুড়িশ্বর নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ২২ সেন্টিমিটার, হিজলার ধর্মগঞ্জ নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ২২ সেন্টিমিটার, আবুপুরের নয়াভাঙ্গুনি নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ১১৮ সেন্টিমিটার, মির্জাগঞ্জের বুড়িশ্বর বা পায়রা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৪৫ সেন্টিমিটার, আমতলীর বুড়িশ্বর বা পায়রা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৩২ সেন্টিমিটার, ঝালকাঠির বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৩৮ সেন্টিমিটার, বেতাগীর বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৪৭ সেন্টিমিটার, বামনার বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৭৭ সেন্টিমিটার, বরগুনার বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৪৩ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটার বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৪৫ সেন্টিমিটার ও উমেদপুরের কচা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ২৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এছাড়া পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেল ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে বাকেরগঞ্জের বুড়িশ্বর নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৩০ সেন্টিমিটার, হিজলার ধর্মগঞ্জ নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ১৮ সেন্টিমিটার, আবুপুরের নয়াভাঙ্গুনি নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ১০৮ সেন্টিমিটার, মির্জাগঞ্জের বুড়িশ্বর বা পায়রা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৬৪ সেন্টিমিটার, আমতলীর বুড়িশ্বর বা পায়রা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৩৭ সেন্টিমিটার, ঝালকাঠির বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৩৫ সেন্টিমিটার, বেতাগীর বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৫০ সেন্টিমিটার, বামনার বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৮২ সেন্টিমিটার, বরগুনার বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৫৭ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটার বিষখালী নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ৫০ সেন্টিমিটার ও উমেদপুরের কচা নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেলের ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এছাড়া পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি ডেঞ্জার লেভেল ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম জানান, গত কয়েকদিন ধরে বরিশালের বেশিরভাগ নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পানি থাকার পর আবার ভাটায় নেমে যাচ্ছে। আশা করি শনিবার থেকে পানি কমতে শুরু করবে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

সারা দেশে ‘হিট স্ট্রোকে’ ৮ জনের মৃত্যু

কারাগারেও মাদকের আখড়া