মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। এখনও পর্যন্ত সফল কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলে একযোগে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস।
ভাইরাসটির তাণ্ডবে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, ইতালি, স্পেন, মেক্সিকো ও ফ্রান্সের মতো দেশ। দিশেহারা হয়ে পড়েছে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ ৫৮ হাজার ৫৪০ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৯২ জনের।
চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাস উৎপত্তি হওয়ার কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও সংক্রমণের যে চিত্রটা সামনে আসছে, তাতে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, এই গোষ্ঠী সংক্রমণের ক্ষেত্রে শিশুদের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, শিশু কিংবা অল্প বয়স্কদের মাধ্যমেই নিঃশব্দে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। আর তাতেই মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে বয়স্করা।
জার্নাল অব পেডিয়াট্রিক্স পত্রিকায় এই সংক্রান্ত সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। আমেরিকার মাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে গবেষকরা জানিয়েছেন, ১৯২ জনের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়েছে, যাদের বয়স ০ থেকে ২২ বছর।
এই সমীক্ষার প্রধান গবেষক লয়েল ওয়ংকার বলেন, সংক্রমিত হওয়ার প্রথম দুদিন শিশুদের শরীরে ভাইরাস যে পরিমাণে থাকছে তা চমকে দেওয়ার মতো। ভাইরাসের উপস্থিতিতে এত বেশি পরিমাণ থাকবে তা আশা করা যায়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
লয়েল ওয়ংকার আরও বলেন, হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করার জন্য অনেক প্রোটেকশনে নেওয়া হচ্ছে, অথচ তার থেকে অনেক বেশি ভাইরাস আছে এমন একটি শিশু সুস্থভাবে চলাফেরা করছে, ফলে তার থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা অনেক বেশি।
অদূর ভবিষ্যতের স্কুল, ডে কেয়ার সেন্টার খোলা যাবে কি না তার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা চলছে। এই প্রসঙ্গে আর এক চিকিৎসক আলেসিও ফাসানো জানিয়েছেন, শিশুরা এই ভাইরাস থেকে অব্যাহতি পাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এই মহামারির সময়ে মূলত উপসর্গযুক্ত করোনা আক্রান্তদের নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। তাই বয়স্করাই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে, উপসর্গ না থাকলেও শিশুদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কম নয়।