টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, বাসাইল, নাগরপুর, দেলদুয়ার, টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, ভুয়াপুর, গোপালপুর ও ঘাটাইল উপজেলায় বন্যায় জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে কয়েক পরিবার পরিবার। অধিকাংশ এলাকা এখনো জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টির ফলে বানভাসি মানুসের দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মির্জাপুর পৌরসভাসহ ১১ ইউনিয়নের বহু ঘরবাড়ি এখনো পানির নিচে। ফলে বানভাসি অসহায় পরিবারগুলো পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে আঞ্চলিক সড়কগুলো থেকে বন্যার পানি না নামায় উপজেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। দুর্গত এলাকার লোকজন নৌকা ও স্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যাতায়াত করছেন।
মির্জাপুর পৌরসভা, ফতেপুর, লতিফপুর, মহেড়া, জামুর্কি, বহুরিয়া, ভাওড়া, ভাদগ্রাম, ওয়ার্শি, বানাইল এবং আনাইতারা ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্যাকবলিত লাখো মানুষের দুর্ভোগের চিত্র। কদিমধল্যা-বরাটি রোড, মির্জাপুর-ভাওড়া-কামারপাড়া রোড, মির্জাপুর-ওয়ার্শি-বালিয়া রোড, কুরনী-ফতেপুর-বাসাইল রোড, কদিমধল্যা-ছাওয়ালী রোড, দেওহাটা-বহুরিয়া রোড, মির্জাপুর-পাথরঘাটা রোডসহ অধিকাংশ আঞ্চলিক রোডে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
ভাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের মো. আমজাদ হোসেন বলেন, তার ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট ও ঘরবাড়ি এখনো পানির নিচে। সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রায় দেড় মাস ধরে কয়েক দফায় বন্যার কারণে বানভাসি অসহায় পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
মহেড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাদশা মিয়া জানান, ১৯৮৮ এবং ১৯৯৮ সালের পর মির্জাপুরে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হয়নি। এবারের বন্যায় রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ হাট বাজার ডুবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বংশাই ও লৌহজং নদীর পানি কমছে খুব ধীর গতিতে। প্রায় দেড় মাস ধরে বন্যার পানির কারনে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করছেন।
বংশাই নদীর ত্রিমোহন ব্রিজের কাছে গিয়ে দেখা গেছে, পুষ্টকামুরী পুর্বপাড়া, গাড়াইল, বাওয়ার কুমারজানিসহ কয়েকটি গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার গত এক মাস ধরে ব্রিজের উপর পলিথিনের তাবু টাঙিয়ে বাস করছেন। বন্যায় তাদের বাড়ি ঘরে এখনও কোমর পানি। এখন নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ত্রাণ সহায়তাও পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। ফলে খুব কষ্টে তাদের জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুল মালেক মোস্তাকিম এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) মীর্জা মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসন থেকে যে পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা পাওয়া গেছে তা তালিকাভুক্ত বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বানভাসীদের তালিকা সংগ্রহ করে নগদ টাকা এবং খাদ্য বিতরণ করে যাচ্ছেন।