বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রাঙ্গামাটি নদীতে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্মাণাধীন গোমা সেতু’র উচ্চতা নিয়ে জটিলতা দেখায় তা পরিদর্শন করেছেন বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেকসহ সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী মো. মহিদুল ইসলাম বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা জানান, নৌ-চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সেতুটি পরিদর্শন করেছেন সংস্থার চেয়ারম্যান। তবে এ বিষয়ে চেয়ারম্যান ঢাকায় ফিরে প্রতিবেদন জমা দিবেন। গতকাল বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান পরিদর্শনকালে সওজ’র বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদ খান, সংশ্লিষ্ট সেতুর ঠিকাদার মাহফুজ খানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সড়ক ও জনপথ বরিশাল জোনের কর্মকর্তারা জানান, সেতুর উচ্চতা প্রশ্নে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয়ে বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছেন। ঐ সভায় যেসব সেতুর নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স নতুন সংশোধনীর পূর্বে নেওয়া হয়েছিলো এবং অধিকাংশ কাজ সমাপ্ত হয়ে গেছে তার ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে যতটুকু সম্ভব সংশোধন আনায়নপূর্বক সে সকল সেতুর কাজ অবিলম্বে শুরু করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ব্যাপারে সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদ খান জানান, চলতি বছরের জুলাই মাসের শেষের দিকে বিষয়টি সম্পর্কে উর্ধ্বতনদের সকল তথ্যাদিসহ অবহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, নির্মাণাধীন গোমা সেতুর ভিত্তিসহ পিয়ার ও এবাটমেন্টের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে বিয়ারিং সীট লেভের পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে বিধায় সেতুর ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স বৃদ্ধি করতে হলে সেতুটির পিয়ারসমূহ ও এবাটমেন্ট উভয়কে ভেঙ্গে পুনঃনির্মাণ করতে হবে যা স্ট্র্যাকচারের জন্য ক্ষতিকর। তা ছাড়া ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স বৃদ্ধি করলে সেতুর লোড বৃদ্ধি পাবে যা সেতুর ইতোমধ্যে সম্পন্ন হওয়া ভিত্তির জন্য অতিরিক্ত লোড হবে যা ডিজাইন প্রণয়নে বিবেচনা করা হয়নি।
বিভাগীয় শহর বরিশাল থেকে বাকেরগঞ্জ হয়ে পটুয়াখালী দুমকি পর্যন্ত সহজ যাতায়াত নিশ্চিতে বরিশাল-দিনারেরপুল-লক্ষ্মীপাশা-দুমকি জেলা মহাসড়কের ১৪তম কিলোমিটারে থাকা বাকেরগঞ্জের রাঙ্গামাটি নদীতে ২০১৪ সালে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। ২০১৫ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে প্রকল্প প্রণয়ন ও অনুমোদন, বাজেট বরাদ্দ এবং টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ২০১৮ সালের মে মাসে শুরু হয় সেতুর নির্মাণ কাজ। ২০১৫ সালে গোমা সেতুর উচ্চতার বিষয়ে ‘ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স ষ্ট্যান্ডার্ড হাই- ওয়াটার লেভেল হতে কমপক্ষে ৭ দশমিক ৬২ মিটার এবং হরাইজন্টাল ক্লিয়ারেন্স ৩০ দশমিক ৪৮ মিটার রেখে নির্মাণে আপত্তি নেই জানালেও ২০১৯ সালে আপত্তি তোলে বিআইডব্লিউটিএ। বিআইডব্লিউটিএ’র এই চিঠি পাওয়াপর পর বন্ধ হয়ে যায় সেতুর নির্মাণ কাজ। গত বছরের ডিসেম্বরে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে সেতুর কাজ শুরু করতে বলা হলে কয়েক দিন কাজ চলার পর বিআইডব্লিউটিএ’র হস্তক্ষেপে তা পুনরায় বন্ধ হয়ে যায়। এরমধ্যে সেতুর ৬৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয় এবং ২০২১ সালের মধ্যে কাজ সম্পন্নের কথা রয়েছে।
এদিকে রাঙ্গামাটি নদীর উপর নির্মিত বহুলপ্রতীক্ষিত গোমা সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় এ রুটে যাতায়াতকারীদের মাঝে সংশয় দেখা দিয়েছে।