বৈরুতের বন্দর এলাকায় গত মঙ্গলবারের বিস্ফোরণে অন্তত ১৩৫ জন নিহত এবং চার হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। বিস্ফোরণের পর লেবাননে দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
ভয়াবহ এ বিস্ফোরণের ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চারজন বাংলাদেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। বৈরুত সমুদ্র বন্দরে থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজও সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২১ সদস্য আহত হন। এদের মধ্যে ১১ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন জানান, বৈরুত বন্দর এলাকার একটি ওয়্যারহাউসে দুই হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মতো বিস্ফোরক পদার্থ অনিরাপদভাবে মজুদ করে রাখা হয়েছিল।
লেবাননের কাস্টমসপ্রধান বাদ্রি দাহের জানান, তাঁর সংস্থার পক্ষ থেকে অয়্যারহাউসের রাসায়নিক পদার্থ সরিয়ে নিতে বলার পরও তা সরানো হয়নি।
অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সাধারণত সার ও বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বৈরুতের বিস্ফোরণের মাত্রা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা শহরে আণবিক বোমা বিস্ফোরণের ১০ ভাগের একভাগ। তবে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের হিসাব বাদ দিলে, বৈরুতের বিস্ফোরণকে ‘মানব ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ বিস্ফোরণকাণ্ড’ বলছেন শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈরুত বন্দরে একটি বিস্ফোরক দ্রব্যের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।
বৈরুতের গভর্নর মারওয়ান অবুদ জানিয়েছেন, ‘বিস্ফোরণে প্রায় তিন লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্রয়, খাদ্য এবং পানি সরবরাহে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিসের ১০ সদস্য নিহত হয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতি ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার বা তার বেশিও হতে পারে।’