নোয়াখালী প্রতিনিধি :সুবর্ণচরে আলোচিত নববধু ফাহিমা আক্তার পপি আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রেমিক ও নব বিবাহিত স্বামী এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিচারের দাবিতে বিশাল মানববন্ধন করেছে সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরের দিকে উপজেলার চরবাটা খাসেরহাট রাস্তার মাথায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য তামান্না ও জামাল উদ্দিন, এলাকাবাসীর পক্ষে হানিফ মাহমুদ, কাজল, ফারুক, পলাশ, হাসান কবির,আশিক উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বক্তারা, শিক্ষার্থী পপির হত্যার প্ররোচনাকারী সাবেক প্রেমিক রিয়াদ ও নব বিবাহিত স্বামী মাসুদ এবং তার পিতা সামছুল আলম, বোন কলি আক্তারকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
উল্লেখ্য,নোয়াখালীর সুবর্ণচরে স্বামীর মুঠোফোনে সাবেক প্রেমিকের পাঠানো ম্যাসেজ ও এডিট করা ভিডিও নিয়ে অপবাদের জেরে বিয়ের চার দিন পর গত বুধবার গলায় ফাঁস দিয়ে প্রাণ দেয় নববধূ ফাহিমা আক্তার পপিকে (২২)।
নিহত পপি উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো.সেলিমের মেয়ে। সে সৈকত সরকারি কলেজে বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল। সে স্থানীয় একটি কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষক ছিলেন
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। গতকাল, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকার ওয়ান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে, গত বুধবার ২০ নভেম্বর বিকেলে উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের নিজ বাড়ির পাশে এক আত্মীয় বাড়িতে সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত পপি স্থানীয় সৈকত সরকারি কলেজের ছাত্রী ছিল। কলেজে পড়াশুনা করার সময় পপির সাথে মহিন ইসলাম রিয়াদের পরিচয় ছিল। পারিবারিক ভাবে সিন্ধান্ত নিয়ে গত সোমবার ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিজিবি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের সঙ্গে বিয়ে হয় । বিয়ের পর রিয়াদ পপির স্বামী মাহমুদের কাছে দাবি করে পপির সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এরপর রিয়াদ পপির সংসার ভাঙ্গার জন্য তার সাথে পপির বিভিন্ন ম্যাসেজ, যৌথভিডিও তার স্বামীর মুঠোফোনে প্রেরণ করে। এ নিয়ে মাহমুদ ও তার পরিবারের সদস্যরা নববধূকে চরিত্র ভালো নয় বলে বিভিন্ন অপবাদ দিতে থাকে। পরবর্তীতে মাহমুদ পপির সাথে সংসার করবেনা বলে জানায় এবং তার মত মেয়ে বেঁচে না থেকে মরে যাওয়ার জন্য বলে অপবাদ দেয়। গত বুধবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ির পাশে এক আত্মীয় বাড়িতে পপি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেলে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া বলেন, এ ঘটনায় নিহত নববধূর চাচা বাদীয় হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের দত্তের পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।