সীতাকুণ্ড প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ডে এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে সীতাকুণ্ডের বারৌয়াঢালা ইউনিয়নের পূর্ব লালানগর গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজখান আওয়ামীলীগ সরকার আমলে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে দাপটের সাথে চলা ফেরা করত। তার নামে সীতাকুণ্ড থানায় খুন, ডাকাতি,অস্ত্রসহ ৬/৭ টি মামলা রয়েছে।
গত ৫ আগষ্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর সে এলাকা ছাড়া হলেও মাঝে মাঝে সে পাশের গ্রামের এক বোনের বাড়িতে রাত কাটাত।
স্থানীয় সূত্রে ও বাসিন্দা মো, মাসুম প্রতিনিধি কে জানায়,গত মধ্যরাতে তাকে ঘর থেকে বের করে পিটিয়ে হত্যা করা হতে পারে বলে অনেকে জানায় তবে সে দারোগারহাট এলাকার ত্রাস সাইদুল ইসলামের গ্রুপে জড়িত ছিল। দলীয় কোন্দল ও পরকীয়ার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে ধারণা করছে এলাকাবাসী।
সূত্রে আরো জানা যায়, আওয়ামী লীগের আমলে দারোগারহাট এলাকায় ইফতারের পূর্ব মুহুর্তে ইফতারী কিনে বাড়ী ফেরার পথে জামায়াত কর্মী বাবুকে ইসলাম বাহিনী কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত যুবলীগ সন্ত্রাসী ফিরোজও বাবু হত্যায় জড়িত ছিল।
নিহত ফিরোজ বারৈয়াঢালা ইউনিয়ন এর ৩ নং ওয়ার্ডের জিন্নাত আলী হাজী বাড়ির কামাল উদ্দিনের পুত্র বলে জানা গেছে।
পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে সকালে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্ত্রের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে।
নিহত যুবলীগ নেতা ফিরোজ রাজনীতির শুরুতে বারৈয়াঢালা ইউপি চেয়ারম্যান রায়হান গ্রুপের সাথে রাজনীতি করতো। পরে রায়হান গ্রুপ ছেড়ে ইসলাম বাহিনীর প্রধান সাইদুল ইসলামের গ্রুপে যোগ দেয়। তখন তাদের মধ্যে এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। পরে সে গ্রুপিং রাজনীতির স্বীকার হয়ে একাধিকবার জেলও খেটেছে।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে এক গৃহবধুর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে। তার বোনের বাড়ির পাশে পরস্ত্রীর সাথে সে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল দীর্ঘ ৫ বছর ধরে । সে পরকীয়ার টানে শুক্রবার রাতে ওই বাড়িতে আসছে বলে জানা যায় ।
সরকারের পট পরিবর্তনের পর ফিরোজ নিজের বাড়িতে না থেকে লালানগর এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতো। গত শুক্রবার রাত দুই টার দিকে ২০/৩০ জনের একটি মুখোশদারী দল তাকে ওই বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে তাকে পিটিয়ে আহত করে ফেলে রেখে যায়।
স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার ফুফাত ভাই মোশারফের দাবী, যুবলীগ করার কারণেই ফিরোজকে হত্যা করা হয়েছে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান প্রতিনিধি কে জানায়,যুবলীগ নেতা ফিরোজ হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ফিরোজের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড থানায় ৪ টি ডাকাতি এবং দুটি ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা রয়েছে।সরকার পতনের পর সে ঐএলাকায় আত্মগোপনে ছিল।