জাহিন ইসলাম, চবি প্রতিনিধি : এক দশকেরও অধিক সময় পর প্রকাশ্যে আসলেন ইসলামি ছাত্র শিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি নাহিদুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি মুহাম্মদ ইব্রাহিম। উল্লেখ্য ইসলামি ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি নাহিদুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৬-১৭ সেশনের ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবং সেক্রেটারি মুহাম্মদ ইব্রাহিম বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৫-১৬ সেশনের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী।
সুদীর্ঘ ষোল বছর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র শিবিরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড গোপনীয়তার সহিত পরিচালিত হয়েছে। একটি রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র শিবিরের কার্যক্রম ছিল অনেকটাই লোকচক্ষুর অন্তরালে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেকেই জানতো না এই ছাত্র সংগঠনটির পরিচালনা কমিটির সদস্যদের। এমন ছাত্র রাজনীতির নিদর্শন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত বিরল।
২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী ফ্যাসিবাদি সরকারের পতন ঘটে, এর পরপরই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আসে অনুকূল ধারার স্রোত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৪-এ সেপ্টেম্বর ২৪ দফা দাবি নিয়ে প্রকাশ্যে আসে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্যতম দুই নেতৃত্ব সভাপতি নাহিদুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি মুহাম্মদ ইব্রাহিম।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারির দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা চাই ছাত্র রাজনীতির সংস্কৃতির পরিবর্তন হোক।”এ প্রসঙ্গে দীর্ঘ ষোল বছর স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ছাত্রদলের লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদল সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, “ছাত্রশিবিরের এই আংশিক প্রকাশ্যে আসাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তারা দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে ছাত্রদলের পাশাপাশি জুলুমের শিকার হয়েছে। তবে যেহেতু ২৪ এর ছাত্রজনতার আন্দোলনের স্বাধীনতার পর অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, আমরা আশা রাখব তারা সম্পূর্ণ প্রকাশ্যে আসবেন ও সকল কমিটি প্রকাশ করবেন তাদের আসল নামসহ।”
তিনি আরও বলেন, “গুপ্ত রাজনীতি করা সুস্থ রাজনীতির ধারক নয়। গত রেজিমে আমরা আমাদের সকল কর্মসূচি ওপেনলি ও ট্রান্সপারেন্ট ভাবে করেছি। আমাদের সকল কমিটি ছিল পাবলিক নোলেজে। রাজনীতির মধ্যে যেহেতু ট্রান্সপেরেন্সি খুব গুরুত্বপূর্ণ, তাদের থেকেও আমরা তা আশা করি। এভাবে ক্যাম্পাসের রাজনীতিতে আমরা সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক আদর্শিক সহাবস্থান করতে চাই। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের অধিকারই আদায়ে সোচ্চার থেকে কাজ করতে চাই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী আদর্শের ভিত্তিতে।”
জবাবদিহিতা ও মেরিটোক্রেটিক সিস্টেম নিশ্চিত করার আশা ব্যক্ত করে আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করতে চাই — তাদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে জবাবদিহিতার ও মেরিটোক্রেটিক সিস্টেম নিশ্চিত করতে চাই। নিজেদের সাধারণ ছাত্রদের পাশে রেখেই ন্যায় ও ইনসাফ নিশ্চিত করতে চাই।”