নিউজ ডেস্ক : গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় দেশের উন্নয়ন করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।সোমবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে বাংলার জনগণের ভোটের মাধ্যমে আমরা এ পর্যন্ত ক্ষমতায় আছি। বাংলাদেশে অন্তত গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত আছে। আর গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত আছে বলেই আজকে আমরা দেশের উন্নয়ন করতে পারছি।উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশটা এগি যাক।দেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এখন বাংলাদেশ আসলে, সত্যি কথা বলতে কী উন্নয়নের রোড মডেল হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে করোনা এবং এ যুদ্ধ আর স্যাংশন এটা আমাদের অনেকটা সমস্যায় ফেলছে।তিনি বলেন, মানুষের জীবনমান উন্নত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতি এখনও গতিশীল আছে, চলমান আছে। সবার সহযোগিতায় অবশ্যই আমরা এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারবো।উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে আমি আহ্বান করেছি যার যতটুকু জমি আছে নিজের খাদ্য নিজে উৎপাদন করতে হবে। নিজের ব্যবস্থা নিজে করতে হবে। কারণ আমরা বিশ্বব্যাপী দেখি মুদ্রাস্ফীতি।মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যতদূর সম্ভব আমাদের দেশের মানুষের যেন কষ্ট না হয়। তার জন্য যথাযথভাবে সেগুলো যেখান থেকে পারছি, যত দাম দিয়ে হোক আমরা ক্রয় করার চেষ্টা করছি এবং ক্রয় করে যাচ্ছি। মানুষের জীবনমান যাতে সহজভাবে চলতে পারে তার ব্যবস্থা নিচ্ছি।শেখ হাসিনা বলেন, শুধু তাই না, যারা একেবারে বয়োবৃদ্ধ বা পঙ্গু অসহায় প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল আমরা দিচ্ছি বিনা পয়সায়। আমরা ১৫ টাকা কেজিতে চাল আমাদের যারা নিম্নবিত্ত তাদের ৫০ লাখ মানুষকে আমরা দিচ্ছি। আরও এক কোটি মানুষকে আমরা কার্ড করে দিয়েছি যেখানে তাদের প্রয়োজনীয় চারটি পণ্য চাল, ডাল, তেল, চিনি তারা ক্রয় করতে পারে।তিনি বলেন, স্বল্পমূল্যে মাত্র ৩০ টাকায় চাল ক্রয় করবে। সেই ব্যবস্থাটাও করে দিয়েছি। করোনার সময় আমরা নগদ অর্থ দিয়েছি, গ্রাম পর্যায়ে পর্যন্ত মানুষকে কোন শ্রেণির মানুষ কেউ যেন এতটুকু অবহেলিত না থাকে।বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য হলো- করোনা ভাইরাস এটা সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি করেছে। তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাস থেকে কেবল উত্তোলন ঘটানোর চেষ্টা করছে। ঠিক সেই সময় এলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং স্যাংশন, পাল্টা স্যাংশন। ফলে আমাদের প্রত্যেকটা জিনিস, যা আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হয়। যেমন- জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, গম, ভুট্টা, ডালসহ বিভিন্ন জিনিস- প্রতিটি জিনিসের মূল্য কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। পরিবহন মূল্য তার থেকে বেশি।সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হবে জনগণের বাহিনী তথা পিপলস আর্মি। আমি বিশ্বাস করি সত্যি আমাদের সেনাবাহিনী এখন পিপলস আর্মি। কারণ দুর্যোগ অথবা যে কোনো দুর্ঘটনায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়ায়।যুদ্ধের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু একটি কথা বলবো, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করবো না। আমরা শান্তি চাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের এ নীতি শিখিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আমরা কিন্তু সেই নীতিতে অটল থেকে পৃথিবীর সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কাজ আমরা করে যাচ্ছি। যার শুভ ফল দেশের মানুষ পাচ্ছে।শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী গড়তে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের সশস্ত্র বাহিনী- প্রত্যেকটা বাহিনীকে আধুনিক সরঞ্জামাদি ক্রয় করে দেওয়া এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সময়োপযোগী হোক। … ফোর্সেল গোল ২০৩০ এর আলোকে আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করে দিচ্ছি।সেনাকুঞ্জে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যসহ বিভিন্ন বাহিনী প্রধান, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।