হারিকেন লরা’র তাণ্ডবে লন্ডভন্ড লুইজিয়ানা, মৃত ৪

হারিকেন লরা’র তাণ্ডবে লন্ডভন্ড লুইজিয়ানা, মৃত ৪

হারিকেন লরায় কেড়ে নিল ৪ আমেরিকানের প্রাণ। লন্ডভন্ড হয়েছে লুইজিয়ানা উপকূলীয় এলাকার জনজীবন। তবে যে ধরনের জলোচ্ছ্বাস হবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল, বাস্তবে ততটা ঘটেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) ভোর রাত পর্যন্ত চলা এই হারিকেন লুইজিয়ানা স্টেটের ক্যামেরোন এলাকা অতিক্রমকালে ৪ নম্বর ঝড়ো হাওয়ায় পরিণত হয় এবং এর গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ১৩৫ মাইলের অধিক। লক্ষাধিক বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। ভেঙ্গে গেছে অনেক গাছ। বাড়িঘরও উড়ে গেছে বেশ কিছু। তবে আগেই লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ায় হতাহতের ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।

লুইজিয়ানার লেক চার্লস সিটিতে ম্যাকনীজ স্টেট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক, বাংলাদেশি-আমেরিকান ড. মতিউর রহমান বলেন, হ্যারিকেনের পূর্বাভাস জেনেই বাড়ি ছেড়ে ২২০ মাইল দূর নিউ অর্লিন্সে এসেছি সপরিবারে। হ্যারিকেনের পাশাপাশি গত বুধবার দিবাগত রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত বেশ কটি টর্নেডো আঘাত করেছে লেক চার্লসে। এজন্যে বৃহস্পতিবার এক বন্ধুকে পাঠিয়েছিলাম সরেজমিনে দেখে আসার জন্যে। তিনি ফিরে জানালেন যে, আমাদের সকলের বাড়িঘর অক্ষত রয়েছে। ১৫ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়নি। সেটি ছিল ৫/৬ ফুট। তবে পার্শ্ববর্তী ক্যামেরুন প্যারিশে ১০ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। সেখানে অনেক ক্ষতি হয়েছে। অধ্যাপক মতিউর উল্লেখ করেন যে, ঐ এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশির সকলেই ভালো আছেন। তাদের বাড়িঘরেরও তেমন কোন ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়নি।

লুইজিয়ানা স্টেটের গভর্ণর  (ডেমক্র্যাট) জন বেল এডোয়ার্ডস ঝড়ো হাওয়া শান্ত হবার পর গতকাল বৃহস্পতিবার অপরাহ্নে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘পূর্বাহ্নেই যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করায় বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছি সকলেই। তবে হারিকেন ও একইসাথে বয়ে যাওয়া টর্নেডোতে লাখো মানুষের সহায়-সম্পদের নিদারুন ক্ষতি হয়েছে। কয়েক ঘন্টার তান্ডবে সবকিছু উলোট-পালট হয়ে পড়েছে-ভাবতেও অবাক লাগে।’

গভর্ণর আরও জানান যে, হারিকেনের তাণ্ডবে বাড়ির ওপর ভেঙ্গে পড়া বড় গাছের চাপায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গভর্ণর এডোয়ার্ডস উল্লেখ করেন, লুইজিয়ানার দক্ষিণ-পশ্চিমে সবচেয়ে বেশী গতিতে হারিকেন লোরা আছড়ে পড়লেও প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে ভারনন, জ্যাকসন, একাডিয়া প্যারিশে। মৃতদের মধ্যে ১৪ বছরের এক কিশোরীও রয়েছে বলে গভর্ণর জানান।  একদিকে, করোনার তান্ডব, আরেকদিকে হারিকেন লোরার থাবায় লুইজিয়ানা, টেক্সাসের বিস্তীর্ণ জনপদে এখনও মানুষজন ঘরে ফিরতে পারেননি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানার আগেই সকলে নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন।

এদিকে, হোয়াইট হাউজ থেকে বলা হয়েছে যে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের জন্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেখানে যাবেন আগামিকাল শনি  অথবা রবিবার। টেক্সাসের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাতেও যেতে পারেন ট্রাম্প। ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সহায়তার জন্যে ফেডারেল ইমার্জেন্সি এজেন্ট(ফেমা)’র লোকজন তাবু গেড়েছেন বলে জানা গেছে।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

ঈদগাঁও–ঈদগড় সড়কে গুম ও ডাকাতি দমনে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি

শিবচরে মাদক রোধে ইউএনও’র কাছে স্মারকলিপি দিল উপজেলা বিএনপি