ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট কিনতে কমলাপুর রেলস্টেশনে কাউন্টারগুলোয় বিকেলেও টিকিটপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। তবে এ সারির অধিকাংশ টিকিটপ্রত্যাশীই এসেছেন আগামীকালকের জন্য। প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই তাদের দীর্ঘ লাইন। কেউবা এসেছেন আজ দুপুরে আবার কেউ গতকাল থেকে ঘুরছেন স্টেশনেই। এমনই একজন খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা মো. কিবরিয়া।
প্রত্যাশিত আগামী ৭ জুলাইয়ের টিকিটের জন্য তিনি স্টেশনে ঘুরছেন বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) থেকেই। শুক্রবার বিকেলে তার সঙ্গে কথা হয় স্টেশনের ১১ নম্বর কাউন্টারের সামনে। আগামীকাল টিকিটপ্রত্যাশীদের লাইনে এ কাউন্টারে তিনিই প্রথম। বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন সিরিয়ালে থাকা পাশের জনদের সঙ্গে।
মো. কিবরিয়ার পঞ্চগড়গামী নীলসাগর এক্সপ্রেসের টিকিট প্রয়োজন। কখন এসেছেন ও রাতে কীভাবে স্টেশনে থাকবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল এসেছিলাম স্টেশনে। এরপর সিরিয়াল দিয়ে আজ দুপুর ১টার পর এসেছি। এখানে পেপার বিছিয়ে বসে রাতে স্টেশনে বসা আগে-পেছনের ভাইদের সঙ্গে লুডু খেলব, গল্প-গুজব করবো, সময়টা পার হয়ে যাবে। পঞ্চগড়ে এখন মূলত মহাসড়কে চার লেনের কাজ চলছে, তাই বাসে যাওয়া ঝক্কি-ঝামেলার ব্যাপার। সেজন্যই ট্রেন।শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে আগামী ৬ জুলাইয়ের ঈদযাত্রার টিকিট বিক্রি শেষ হয়। তারপরও অনেকে এসেছেন টিকিটের খোঁজে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই সাত থেকে আটজন টিকিটপ্রত্যাশী দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা আগামী ৬ জুলাইয়ের টিকিটের জন্য স্টেশনে এসেছেন, যদি পাওয়া যায়, এ ভরসায়। আর এ যে এত কষ্ট, টিকিট হাতে পেলেই সব কষ্ট আনন্দে পরিণত হবে।এদিকে অগ্রিম টিকিটের বিষয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, কাউন্টারে মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন এজেন্সির লোকজন মনিটরিং করছে। এছাড়া ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া কাউকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। একযোগে ৩৭টি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ২৭ হাজার টিকিটের অর্ধেক কাউন্টার থেকে আর অর্ধেক টিকিট অনলাইনে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, টিকিটের চাহিদা অনেক কিন্তু টিকিট নির্ধারিত। তাই চাইলেও সবাইকে টিকিট দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে এবার স্ট্যান্ডিং টিকিটের ব্যবস্থা থাকবে। আগামীকাল থেকে টিকিটপ্রত্যাশীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর রাতে স্টেশনে অবস্থান করা টিকিটপ্রত্যাশীদের নিরাপত্তার বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থানা কর্তৃপক্ষ জানায়, স্টেশনে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত ও কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য সবসময়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।