ঢাকা: অক্সফোর্ড এবং রাশিয়া ও চীনসহ যেসব দেশ করোনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় স্টেজে আছে তাদের সঙ্গে সরকার যোগাযোগ রাখছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত দেবেন।
সোমবার (২৪ আগস্ট) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তাইওয়ান থেকে পাওয়া করোনার সুরক্ষাসামগ্রী গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
ইতোমধ্যে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ভ্যাকসিন উৎপাদনের অ্যাডভান্স স্টেজে চলে গেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, চায়নার বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও রাশিয়া অ্যাডভ্যান্স স্টেজে চলে গেছে। এছাড়া আমেরিকায় ফাইজা এবং মর্ডানা অ্যাডভান্স স্টেজে আছে।
‘আমরা গত জুলাই মাসেই এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা আমদের জানান, যখন তারা ভ্যাকসিন পাবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে তারা ২০ শতাংশ পর্যন্ত দিতে পারবে। এমন আশ্বাস তাদের কাছ থেকে আমরা পেয়েছি। ’
বছরের শুরুতে চীনের উহানে করোনা সংক্রমণের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া এই সংক্রমণ ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে গোটা বিশ্ব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, অন্য দেশের যেসব প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন উৎপাদনে এগিয়ে আছে তাদের সঙ্গেও যোগযোগ আছে। এসব বিষয় প্রধনমন্ত্রীকে আমরা জানিয়েছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীই নেবেন। যখন সময় হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমরা সিদ্ধান্ত পেয়ে যাবো।
করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদনে একরকম প্রতিযোগিতার মুখে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন পেতে বিলম্ব হবে কিনা, সে আশঙ্কা করছে বিভিন্ন মহল।
এই আশঙ্কা থেকে ভ্যাকসিনের বিষয়ে আমরা কোনো আঞ্চলিক রাজনীতির শিকার হচ্ছি কিনা- জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটা স্বাস্থ্যসেবার বিষয়। কোভিড-১৯ একটি বৈশ্বিক মহামারি। পৃথিবীর সব দেশেই এটা ছেয়ে গেছে। লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। বিশ্বব্যাপী প্রায় দুই কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। কাজেই এগুলো নিয়ে যেন কোনো রাজনীতির জায়গা হয় না।
‘যখন ভ্যাকসিন তৈরি হবে এবং সেটা কার্যকর ও অ্যাভেইলঅ্যাবল হবে, যে ভ্যাকসিনটা আমরা সাশ্রয়ী দামে তাড়াতাড়ি পাবো সেটিই সংগ্রহ করবো। ’
রাশিয়ার ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি কিনা- প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে আমাদের যোগযোগ হচ্ছে। আমাদের দূতাবাস ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যোগাযোগ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরও এ বিষয়ে অবহিত আছে। সব জায়গায় যোগাযোগ করা হচ্ছে, সময় মতোই আমরা ভ্যাকসিন পেয়ে যাবো।
চীনের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে ট্রায়ালের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যখন সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে তখন আমরা ট্রায়াল করবো।
করোনাকালে আমদানি করা সামগ্রী অলস পড়ে থাকবে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এগুলো পড়ে থাকবে না, এগুলো সব সময় কাজে লাগবে। এসব সমাগ্রী নন-কোভিড হাসপাতলে ব্যবহার করা হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, করোনায় অন্য উন্নত দেশের তুলানায় আমাদের মৃত্যুহার কম। আক্রান্তও কমে আসছে। অনেকেই টেলিমেডিসিন সেবা নিয়ে সেরে উঠছেন। কোভিড হাসপাতালগুলোও ৬০-৭০ শতাংশ সিট খালি আছে। এখন স্পেশালাইজড হাসপাতালের সংখ্যা কমিয়ে সাধারণ চিকিৎসার জন্য খুলে দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।