নিউজ ডেস্ক : বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদে অনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা রয়েছে বলে মন্তব্য করে সরকারি দল আওয়ামী লীগের তোপের মুখে পড়েন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। এই পরিস্থিতিতে তিনি সংসদ থেকে এক পর্যায়ে ওয়াকআউট করেন।রোববার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে এ ঘটনা ঘটে।পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি মন্তব্য দেওয়ার সময় এই মন্তব্য করেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ উঠে। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীও এ ধরণের মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন এবং তা প্রত্যাহারে অনুরোধ করেন। পরে হারুন তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। তবে তিনি তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বলার প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন।এর আগে সংসদে জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্যের পর বিএনপির হারুন পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য দিতে ফ্লোর নেন। বক্তব্যে তিনি চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন এবং যে এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ ভোট হচ্ছে সেখানে আতঙ্কের এলাকায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। এ সময় সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদের উদ্বৃতি দিয়ে ‘এই সংসদে অনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা রয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন। এর সঙ্গে সঙ্গে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করতে থাকেন। চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়।এ সময় স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমি আগে উত্থাপন করি। আপনি যদি আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারেন তাহলে অবশ্যই প্রত্যাহার করবো। এ সময় চিৎকার চেচামেচি আরও বেড়ে যায়। যার কারণে স্পিকার কোনো কথা শুনতে পাচ্ছেন না বলে জানান।এক পর্যায়ে প্রতিবাদের মুখে হারুন স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমার বক্তব্য আপনি প্রত্যাহার করার অনুরোধ করছেন আমি প্রত্যাহার করছি। ইতোমধ্যে দুই ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তৃতীয় ধাপ ও চতুর্থ ধাপের তফশিল হয়েছে। তিন শতাধিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় যাদের নির্বাচিত বলা হচ্ছে। তারা কাদের দ্বারা নির্বাচিত? এই বিষয় আপনার কাছে ব্যাখ্যা চাচ্ছি।তিনি বলেন, সংবিধান যেখানে বলছে প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। সম্প্রতি ফ্রান্সে ভোট হয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট ভোট হয়েছে। সেখানে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার পরও সেখানকার আইন অনুযায়ী ৫০ শতাংশ ভোট প্রেসিডেন্ট পায়নি বলে পুনরায় ভোট হয়েছে।হারুন বলেন, কোনো কাজের জন্য যখন টেন্ডার হয় সেখানে একজন অংশগ্রহণকারী থাকলে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করা হয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় যাদের নির্বাচিত করা হচ্ছে সেসব জায়গায় তাহলে কেন পুনঃতফসিল করা হচ্ছে না? আজকে নির্বাচনে বিরোধী দল অংশ নিচ্ছে না। যে কারণে সরকারি দল ও তাদের বিদ্রোহী প্রার্থীরা সারা দেশে হানাহানি-খুনোখুনিতে লিপ্ত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন স্থানীয় নির্বাচনে এটা একটু ঝগড়াঝাটি। ৪০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছে। এরপরও আমরা এটাকে ঝগড়াঝাটি বলবো? স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আমরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছি? যুক্তিসঙ্গত সাংবিধানিক এই জায়গাটি পয়েন্ট অব অর্ডার আকারে আমি উত্থাপন করতে চেয়েছি। কিন্তু আমাকে প্রত্যাহার করতে বলায় সংসদ থেকে ওয়াকআউট করছি। এটা বলে হারুনুর রশিদ সংসদ কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান।