ঢাকা: ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মাওলানা তাজউদ্দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় পালিয়ে রয়েছেন। তাকে ফেরত আনার লক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের কাছে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়।
তবে তাকে এখনো ফেরানো সম্ভব হয়নি।
মাওলানা তাজউদ্দিন ২০০৬ সালে নাম পরিচয় গোপন করে ভিন্ন নামে পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্তানে পালিয়ে যান। সেখান থেকে পালিয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকায়। তারপর থেকেই মাওলানা তাজকে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সেই প্রচেষ্টা এখনো সফল হয়নি।
মাওলানা তাজউদ্দিনকে ফেরানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বেশ কয়েক দফা দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়। এছাড়া তাকে ফেরাতে দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে বহিঃসমর্পণ চুক্তির চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ শাহরিয়ার আলম দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মিনিস্টার নোমাইনদিয়া মফেকেতোর সঙ্গে এক বৈঠকে মাওলানা তাজকে ফেরত দেয়ার অনুরোধও করেন। তবে এতসবের পরেও মাওলানা তাজকে এখনো ফেরানো যায়নি।
নিষিদ্ধ সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা ছিলেন মাওলানা তাজউদ্দিন। পাকিস্তান থেকে তারই তত্ত্বাবধানে গ্রেনেড নিয়ে আসা হয়। সেই গ্রেনেড ব্যবহার করা হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের সমাবেশে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মাওলানা তাজ তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোটের শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ছোট ভাই। আব্দুস সালাম পিন্টুও একই মামলার আসামি। তাকেও মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০১৮ সালে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালের রায়ে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন মাওলানা তাজউদ্দিন। এছাড়া রায়ে আরো ১৯ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। সেই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। সেই গ্রেনেড হামলায় মারা যান আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী।