বিনোদন ডেস্ক : আলোচিত-সমালোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।গ্রাহককে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করা এবং মাসের পর মাস গ্রাহকের টাকা আটকে রাখার ব্যাপক অভিযোগ ওঠে ইভ্যালির বিরুদ্ধে। এরপর বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক হয়ে আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এক ভুক্তভোগী গ্রাহকের করা মামলায় বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে গ্রেফতার হোন ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী ও ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন।তাদেরকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকার সেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম এ আদেশ দেন।শবনম ফারিয়া মাস তিনেক আগে ইভ্যালিতে যোগ দিয়েছিলেন। জানা গেছে, চলতি মাসের প্রথম দিকেই ইভ্যালি থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এমনকি প্রতিষ্ঠানটি থেকে নাকি কোন বেতনও পাননি এ তারকা। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) থেকে এমন খবর বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে। কিন্তু ফারিয়া জানান, তার সঙ্গে কথা না বলেই এমন সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। এ জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এ অভিনেত্রী। শনিবার সন্ধ্যায় বাংলা নিউজকে শবনম ফারিয়া বলেন, ‘কিছু বিষয় এখন পরিষ্কার করার সময় এসেছে। আমি জুন, জুলাই দুই মাস ইভ্যালির গণসংযোগ বিভাগে কাজ করেছি। আমি সেখানে যোগদানের ১৫ দিন পর থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি রিপোর্ট চলে আসায় তাদের কার্যক্রম অনেকটাই কমে এসেছিল। জুলাইয়ের পর আমার দাপ্তরিক কোনো কাজই ছিল না! তাই আগস্টে আমি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আসি। ’ এ অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘অনেকেই জানতে চেয়েছেন, আমাকে দেখে কেউ অর্ডার করে থাকলে তাতে আমার মতামত কী? আমি যোগদানের পরের সপ্তাহ থেকেই সাইক্লোন অফার বন্ধ হয়ে টি-টেন চালু হয়। যেটি ছিল, পণ্য পেলেই টাকা দেবে! সুতরাং আমাকে দেখে অর্ডার দিয়ে ফেঁসে যাওয়ার কোনো সুযোগই নেই। কেউ নিজেকে এসব বলে সান্ত্বনা দিলে কিংবা নিজ স্বার্থ হাসিলে শুধু হেনস্তা করার জন্য। আমাকে টানলে আমার সত্যিই কিছু বলার বা করার নেই। ’শবনম ফারিয়া আরও বলেন, ‘আমি কখনও প্রকাশ্যে এই কোম্পানিকে প্রোমোট করিনি। কখনো বলিনি আপনারা বিশ্বাস রাখেন কিংবা আস্থা রাখেন। দাপ্তরিক কাজের বাইরে আমার কোনো কিছু প্রচার বা প্রকাশের কোনো চুক্তি ছিল না। আমার ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে এক হাজার কোটি টাকার যে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল সেই সংবাদ শেয়ার করেছিলাম। যেটা দেশের ফেসবুক ইউজারদের সম্ভবত অর্ধেক মানুষই শেয়ার করেছিল। ’চাকরি ছেড়ে দিলেও কেন বিষয়টি জানাননি? এ বিষয়ে শবনম ফারিয়া বলেন, ‘আমি অহেতুক আলোচনার অংশ হতে চাইনি। আরিফ আর হোসাইন (ইভ্যালির প্রধান বিপণন কর্মকর্তা) ভাই যখন বললেন, তিনি আর এখানে কাজ করছেন না। তখনও আপনারা তাকে নিয়ে ট্রোল করলেন। চাকরি ছাড়লেও সমস্যা, কাজ করলেও সমস্যা! কোথায় যাবো? অপ্রয়োজনীয় আলোচনার অংশ হতে ভাল লাগে না। কিন্তু আমার ভাগ্য এতো খারাপ কেন যেন আমাকেই সবসময় আলোচনা-সমালোচনায় পড়তে হয়। ’ইভ্যালি থেকে বেতন না পাওয়ার প্রসঙ্গে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি নাকি অভিযোগ করেছি বেতন পাইনি! কাকে অভিযোগ করেছি? কখন অভিযোগ করেছি? কিভাবে করেছি? এই প্রমাণ কেউ দিচ্ছে না! আমার অভিযোগ থাকলে সেটা আমি প্রতিষ্ঠানটির এইচআর ডিপার্টমেন্টে করবো। সাংবাদিক ভাইদের কেন করবো?’একই সঙ্গে শবনম ফারিরা বললেন, ‘আমি যেই কোম্পানিতে কাজ করেছি তারা এখন একটা খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আশা করবো, তারা সব দায় পরিশোধ করে গ্রাহকদের পাশে থাকবে!’এদিকে ইভ্যালির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। তারা যুক্ত হন যথাক্রমে ‘ফেস অব ইভ্যালি’ ও ‘ফেস অব ইভ্যালি লাইফস্টাইল’ হিসেবে। তাদের কেউই এখন আর এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত নেই। কেউ ইভ্যালি ছেড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য, কেউ ছেড়েছেন লেনদেনে অসঙ্গতির কারণে।চলতি বছরের মার্চে ইভ্যালিতে যোগ দেন তাহসান। আর মে মাসেই তিনি চুক্তি বাতিল করে সরে আসেন। তবে চুক্তির শর্ত অনুসারে বিষয়টি প্রকাশ করেননি। অন্যদিকে মিথিলা ইভ্যালিতে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে যোগ দেন গত ১৫ মে। ওই দিন তাহসানসহ ইভ্যালির লাইভে অংশ নেন তিনি। এর দুই মাস পর তিনিও চুক্তি বাতিল করেন।