চাঁদপুরে জমজমাট ইলিশের বাজার

চাঁদপুরে জমজমাট ইলিশের বাজার
চাঁদপুর প্রতিনিধি : দক্ষিণাঞ্চলের আমদানিকৃত ইলিশে চাঁদপুরের হাট এখন সরগরম হয়ে ওঠেছে। পাইকারী ক্রেতার পাশাপাশি খুচরা ক্রেতাও এখন ভিড় জমাচ্ছে শহরের বড় স্টেশন মৎস্য আড়তে।সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখরিত থাকে এ ইলিশের হাট। তবে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ইলিশের আমদানি একেবারেই নেই। চাঁদপুরের রূপালি ইলিশের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। চাহিদাও বেশি। রূপালি ইলিশ না পেয়ে সাগরের ইলিশেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ক্রেতাদের।সোমবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে বড় স্টেশন ইলিশের হাটে গিয়ে দেখা গেল শত শত মানুষ। ইলিশ ক্রয় করতে আসা জেলার বাইরে পাইকার, স্থানীয় ইলিশ বিক্রেতা ও খুচরা ক্রেতাদের বিশাল কর্মযজ্ঞ লক্ষ্য করা গেছে এ সময়। শ্রমিকরাও ব্যস্ত ইলিশ প্রক্রিয়াজাতকরণ কাজে। মাছঘাটের শুরুতে দেখা গেল বরফ কাটার মেশিন। বড় বড় বরফের চাকা মুহূর্তেই মেশিনে ভেঙে ইলিশ প্যাকেজিংয়ের কাজে লাগাচ্ছে। সেই ইলিশ বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর জন্য অন্য শ্রমিকরা বড় বড় বক্সের মধ্যে সারি সারি করে প্যাকেট করছেন। অন্যদিকে মাছ ঘাটে বড় ট্রলারে করে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে আসছেন জেলেরা। সেখান থেকে টুকরিতে করে আড়তে ওঠানো হচ্ছে ইলিশ। প্রায় অর্ধশতাধিক আড়তের সামনে ইলিশের বড় বড় স্তুপ দেখা গেছে।আড়তদার মো. আজিজুল বেপারী  বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের হাতিয়া, শামরাজসহ আশপাশের আমদানিকৃত ইলিশের ওপর নির্ভর করে আমাদের ব্যবসা চলছে। বড় সাইজের ইলিশ এক কেজির ওপরে প্রতিমণ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ হাজার টাকা। ৮-৯শ’ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ ৩২-৩৫ হাজার টাকা। ৬-৭শ’ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫-২৬ হাজার টাকা। ছোট সাইজের ইলিশ লোকাল ও আমদানিকৃত প্রতিমণ ১৬-১৮ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে।ফরিদগঞ্জ থেকে আসা ক্রেতা মো. সাইদুল ইসলাম  বলেন, লকডাউনে চাঁদপুরে আসা হয়নি। সাগর থেকে ইলিশ আসছে জেনেই মাছঘাটে আসলাম। ৮শ’ টাকা কেজি দরে দু’টি ইলিশ কিনেছি ১২শ’ টাকা দিয়ে। আমাদের লোকাল বাজারে ইলিশ পাওয়া যায়, কিন্তু সে মাছগুলো নরম হয়ে যায়। এজন্য সরাসরি এখানে আসলাম। চাঁদপুর শহরের যমুনা রোড এলাকার কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা হয় রূপালি ইলিশ নিয়ে। এ সময় তারা  বলেন, পদ্মা-মেঘনার রূপালি ইলিশ নেই। বর্তমানে ভরা মৌসুমে দিনরাত নদীতে চষে বেড়ালেও রূপালি ইলিশের দেখা মিলছে না। অনেক কষ্টে চলতে হচ্ছে আমাদের। জাটকার মৌসুমে অধিক পরিমাণে জাটকা নিধন ও অতিরিক্ত ড্রেজিংয়ের কারণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। কীভাবে চলবে সংসার? হতাশায় রয়েছি আমরা।চাঁদপুর জেলা মৎস্য সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক হাজী সবে বরাত  বলেন, ৫ থেকে ৭ বছর আগেও চাঁদপুরে হাজার হাজার মণ রূপালি ইলিশ পাওয়া গেছে। কিন্তু নদীতে ড্রেজিংয়ের কারণে এখন আর ইলিশ নেই। বিষয়টি সরকারের নজরে আনা দরকার। আর না হয় আমাদের রূপালি ইলিশের ভবিষ্যৎ কী হবে তা বলা খুবই মুশকিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে ২শ’ থেকে আড়াইশ’ মণ ইলিশ দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসছে। চাঁদপুর সদরের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ ভট্টাচার্য  বলেন, আগস্টের শুরুতে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে এবং মাছের মাইগ্রেশেনও আগের তুলনায় বেড়েছে। আশা করছি, বিগত দিনের চাইতে এবারও মাছের উৎপাদন বাড়বে। জেলেরাও কিছু দিনের মধ্যে তাদের কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাবে। হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।

Leave a reply

Minimum length: 20 characters ::

More News...

দুর্ঘটনার আশঙ্কায় জনমনে উদ্বগে বীরগঞ্জের সড়কগুলো দাপিয়ে বড়োচ্ছে কিশোর চালকরা

সন্দ্বীপে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা উদ্বোধন