খুলনা প্রতিনিধি : আষাঢ়ের টানা বৃষ্টিতে খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় তলিয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। ডুবেছে বসতভিটাসহ ফসলি জমি।গত দুই-তিন দিনের টানা বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কয়রার জনজীবন। জলাবদ্ধতায় স্থবির হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। নেমে এসেছে দুর্ভোগ।বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে, বীজতলা, ফসলের মাঠ, পুকুর, রাস্তাঘাট ও বাড়ির আঙিনা তলিয়ে গেছে। গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয়রা কোনোমতে বাঁধ মেরামত করে জোয়ারের পানি আটকে দিলেও এবার টানা বৃষ্টির খাল-বিল, পুকুর ও রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। ভঙ্গুর বেড়িবাঁধ নিয়ে বন্যা আতঙ্কে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষেরা।বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) বিকেলে কথা হয় কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বেলাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত দুই-তিন দিনের টানা ভারী বর্ষণে গোলখালী, ঘড়িলাল, মাটিয়া ভাঙ্গা ও ছোট আংটিহারা গ্রাম তলিয়ে গেছে। পানির সঠিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে তলিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।অভিযোগ করে তিনি বলেন, এর মধ্যে কিছু অসৎ চিংড়ি ঘের মালিকরা রাতের আঁধারে ওয়াপদার বেড়িবাঁধে পাইপ দিয়ে ঘেরে লবণ পানি ঢোকাচ্ছে। এতে জনগণের আরও ভোগান্তি বাড়ছে। টানা বৃষ্টিতে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষরা কাজে যেতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, দুর্ভোগ যেন কোনো অবস্থাতে পিছু ছাড়ছে না কয়রার মানুষের। কখনও নোনা পানির তোড়ে আবার কখনও অতি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে কয়রা সদর ইউনিয়নে অতি বর্ষণের ফলে যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে তাতে চরম পর্যায়ে জনভোগান্তির তৈরি হয়েছে। পুরো ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বিশাল এ এলাকার পানি নিষ্কাশন কিছু সংখ্যক স্লুইসগেট দিয়ে সম্ভব হচ্ছে না।তিনি আরও বলেন, কয়রায় শুষ্ক মৌসুমে নেই সেচ ব্যবস্থা। বর্ষা মৌসুমে নেই পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। ধসে যাওয়ার সাড়ে তিন বছরেও নির্মাণ হয়নি কয়রা সদরের গুচ্ছগ্রাম সংলগ্ন স্লুইসগেট। পানি নিষ্কাশনের খালগুলো অবৈধ দখলদার আর ইজারাদারা বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ ও নেট-পাটা দিয়ে পানির প্রবাহে বাঁধাসৃষ্টি করছে।